রাজনৈতিক সংঘর্ষে জখম কংগ্রেস সমর্থকের মৃত্যুতে অশান্তি ছড়াল উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায়।
সোমবার স্থানীয় লক্ষ্মীপুর গ্রামে এক ভিলেজ পুলিশকর্মীকে মারধরের জেরে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সেখানে দু’পক্ষের মধ্যে গুলিচালনায় গুরুতর আহত হন শাহিদ আলম ও মহম্মদ হাসিব নামে দুই কংগ্রেস কর্মী। দু’জনকেই রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মাঝরাতে মারা যান শাহিদ (২৫)। মঙ্গলবার সকালে শাহিদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে লক্ষ্মীপুর। চলে বোমাবাজি। উত্তেজিত গ্রামবাসীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়েছে।
শাহিদ লক্ষ্মীপুর অঞ্চল কংগ্রেস সভাপতি সাহিদুল ইসলামের খুড়তুতো ভাই। অভিযোগ, সোমবার লক্ষ্মীপুরের পাশে ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে এক ভিলেজ পুলিশকর্মীকে মারধর করছিল কয়েক জন তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতী। ঘটনার খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা ছুটে যান। যান শাহিদ এবং হাসিব-সহ স্থানীয় কিছু কংগ্রেস কর্মী-সমর্থক। অভিযোগ, এর পর দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিও চলে কয়েক রাউন্ড। ইসলামপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকালে শাহিদের মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন স্থানীয়রা। সকালেই লক্ষ্মীপুরে সড়ক অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। স্থানীয় তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য আজিজ আহমেদ, স্থানীয় তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য উজির আলি এবং আরও কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি দোকান। পুলিশ এলাকায় যেতেই তাদের লক্ষ করে বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। পাল্টা পুলিশও কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান বলেন, ‘‘ওই খুনের সঙ্গে তৃণমূল জড়িত নয়। কংগ্রেসি দুষ্কৃতীরা আমাদের দলের এক জেলা পরিষদ সদস্য এবং একাধিক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর করে
আগুন লাগিয়েছে।’’
স্থানীয় কংগ্রেস নেতা মহসিন আলির অভিযোগ, ‘‘আবেগে গ্রামবাসীরা সড়ক অবরোধ করেছেন। কিন্ত ভাঙচুর এবং আগুন লাগানো হয়নি। তৃণমূল নিজেদের পিঠ বাঁচাতে নিজেরাই আগুন লাগিয়েছে।’’
দলীয় কর্মীর মৃত্যুর প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র এ দিন বলেন, ‘‘নির্বাচন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এ ভাবেই রাজ্যের শাসক দলের মদতে খুন-সন্ত্রাস শুরু হয়ে গেল। আমরা মনে করি, এই রাজ্য সরকারের শাসনকালে কোনও নির্বাচনই সুষ্ঠু ভাবে হওয়া সম্ভব নয়।’’