দল ভাঙানোর প্রতিবাদে পথে নামবে কংগ্রেস

সিপিএম-কংগ্রেস, দুই দলের অন্দরেই থাবা বসিয়েছে শাসকদল। ভাঙিয়ে নিয়েছে দুই বিধায়ককে। এই ‘দলবদলু’-দের বিরুদ্ধে এলাকায় গিয়ে জনমত গড়ে তোলা হবে বলে জানালেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। রবিবার বাঁকুড়ায় তিনি এ কথা জানান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৬ ০৩:৩১
Share:

সিপিএম-কংগ্রেস, দুই দলের অন্দরেই থাবা বসিয়েছে শাসকদল। ভাঙিয়ে নিয়েছে দুই বিধায়ককে। এই ‘দলবদলু’-দের বিরুদ্ধে এলাকায় গিয়ে জনমত গড়ে তোলা হবে বলে জানালেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। রবিবার বাঁকুড়ায় তিনি এ কথা জানান।

Advertisement

জোটের সমর্থনে কংগ্রেসের প্রতীকে লড়ে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে এ বার বিধানসভা ভোটে চমক দিয়েছিলেন তুষারাকান্তি ভট্টাচার্য। ক’দিন আগেই অবশ্য সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূলে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন তুষারবাবু। সেই মতো ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ সমাবেশের মঞ্চে শাসকদলে যোগও দিয়েছেন ওই কংগ্রেস বিধায়ক। সঙ্গে মালদহের গাজল কেন্দ্রের সিপিএম বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস। দল ভাঙানোর কৌশলেই মুর্শিদাবাদের সিপিএম শাসিত জঙ্গিপুর এবং উত্তর দিনাজপুরের কংগ্রেস পরিচালিত কালিয়াগঞ্জ পুরসভা দখলে নিয়েছে তৃণমূল। অথচ এই দুই পুরসভাতেই তৃণমূলের এক জন কাউন্সিলরও ছিলেন না!

এ দিন বাঁকুড়া শহরের ধর্মশালার রাধা ভবনে একটি দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন মান্নান। সেখানেই তুষারবাবুর দলবদলকে ‘বেইমানি’ বলে উল্লেখ করে বিরোধী দলনেতা বলেন, “ওঁকে পদত্যাগ করে ভোটে লড়তেই হবে। আমরা এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ করব। দল বিষ্ণুপুরে সভা, সমাবেশ, মিছিল করবে তুষারবাবুর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে।’’ তবে শুধু বিষ্ণুপুরই নয়, এই ধরনের সব ‘দলবদলুর’ এলাকায় গিয়েই রাজনৈতিক মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। দরকারে সিপিএমের সাহায্য নেওয়া হবে। মান্নানের কথায়, ‘‘যাঁরা এই ধরনের কাজ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে জনমত ও জনরোষ গড়ে তুলতেই হবে!’’ যা শুনে তুষারবাবুর প্রতিক্রিয়া, “এলাকার মানুষ উন্নয়নের স্বার্থেই আমাকে ভোট দিয়েছিলেন। একমাত্র তৃণমূলে থেকেই ওই কাজ করা সম্ভব। তাই দলত্যাগের পদক্ষেপ বিশ্বাসঘাতকতা নয়।’’ রাজনৈতিক মোকাবিলার কথা বলছে সিপিএম-ও।

Advertisement

কংগ্রেস সূত্রের খবর, বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠকে বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের না-ডাকার যে ‘রেওয়াজ’ চালু করেছে শাসকদল, তার বিরোধিতা করতেও এ বার পথে নামা হবে। মুখ্যমন্ত্রী জেলার যেখানে যেখানে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন, তার পাল্টা সভা করার কথাও ভাবা হচ্ছে। সেই সূত্রেই মান্নান প্রশ্ন তুলেছেন, বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ কেন স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক শম্পা দরিপাকে না দিয়ে এই কেন্দ্রের পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী মিনতি মিশ্রকে দেওয়া হল? শম্পাদেবীর ক্ষোভ, “প্রশাসন আমাদের কোনও গুরুত্বই দিচ্ছে না। কোনও কাজের জন্য আবেদন জানালে ‘দেখছি’, ‘দেখব’ গোছের কথা বলে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনিক কোনও বৈঠকেও এখনও ডাক পাইনি।’’

মান্নান বলেন, ‘‘আগে বিরোধীরা তেমন ভাবে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে পারেননি। ফলে মুখ্যমন্ত্রী বেশ শান্তিপূর্ণ ভাবেই যা ইচ্ছে তাই করে গিয়েছেন। তবে এ বার তা হবে না। উনি যে ভাষার কথা বুঝতে পারবেন আমরা সেই ভাষাই এবার প্রয়োগ করব।’’ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের অবশ্য বক্তব্য, সিপিএম বা কংগ্রেস পায়ের তলায় জমি হারিয়েছে বলেই ওদের দল ভাঙছে। এখানে তৃণমূলের কোনও ভূমিকা নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন