অবশেষে সাঁতরাগাছি ও শালিমারকে টার্মিনাল স্টেশনে পরিবর্তন করার কাজ শুরু করল দক্ষিণ-পূর্ব রেল। অনেক বছর আগেই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবায়িত না হওয়ায় এর ব্যয়ও অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই।
মূলত হাওড়া স্টেশনের উপর চাপ কমাতে এই দুই স্টেশনকে টার্মিনাল স্টেশন হিসাবে গড়ে তুলতে চাইছিল দক্ষিণ-পূর্ব রেল। কিন্তু বাজেটে টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় ওই কাজ এত দিন শুরু করা যায়নি। এ বছর রেল বাজেটে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হওয়ায় কাজ শুরু হল।
রেল সূত্রের খবর, হাওড়া থেকে ছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সব ক’টি ট্রেনেরই স্টপেজ থাকলেও সাঁতরাগাছি ও শালিমার স্টেশন দু’টিতে পরিকাঠামো খুব ভাল নয়। রেলকর্তাদের বক্তব্য, তাই দুটি স্টেশনকেই টার্মিনাল স্টেশন হিসাবে চালু করতে গেলে পরিকাঠামো বাড়ানো প্রয়োজন। সেই কথা মাথায় রেখেই পরিকাঠামোর বাড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। সাঁতরাগাছি স্টেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে খরচ ধরা হয়েছে ৩৭৫ কোটি আর শালিমারের জন্য ধরা হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কর্তারা জানিয়েছেন, উন্নয়নের কাজ শুরুও হয়েছে। কিন্তু এই স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় একটি জলাশয় থাকায় হাওড়া কর্পোরেশন রেলের ওই কাজে আপত্তি তোলায় কাজ কিছুটা থমকে গিয়েছে। তবে কর্পোরেশনের দাবি অনুযায়ী দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের শংসাপত্র এনে শীঘ্রই ওই কাজ আবার শুরু করা হবে।
কী উন্নয়ন হবে সাঁতরাগাছি ও শালিমারে?
রেলকর্তারা জানিয়েছেন, দু’টি পর্যায়ে ভাগ করে ওই উন্নয়নের কাজগুলি করা হবে। যাত্রীদের উন্নত পরিষেবা দিতে বিভিন্ন সুবিধা তো থাকছেই, সঙ্গে প্ল্যাটর্ফমগুলির খোলনলচে পাল্টানো, ওভারব্রিজ, কোনা এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যোগাযোগের রাস্তা, ওই জলাশয়ের উপরে ভাসমান প্ল্যাটর্ফম এসক্যালেটর, বিদ্যুতের জন্য সাবস্টেশন ইত্যাদি।
একই ভাবে কাজ শুরু হয়েছে শালিমারেও। এই কাজটিও করা হবে দুই পর্যায়ে। আপাতত প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে। রেল সূত্রের খবর, এই স্টেশনটিরও নতুন ভবন নির্মাণ থেকে শুরু করে যাত্রীদের সুবিধার জন্য উড়ালপুল, স্টেশনে যাত্রীরা যাতে আরও সহজে যাওয়া-আসা করতে পারেন তার জন্য নতুন রাস্তা এবং ভূগর্ভস্ত রাস্তাও হবে। নতুন একটি ইয়ার্ড, স্টেশন থেকে জেটি পর্যন্ত নতুন একটি ফুটপাথ নির্মাণ হবে।
হাওড়া থেকে বর্তমানে প্রায় ৫০ জোড়া (আপ ও ডাউন) মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন চালায় দক্ষিণ-পূর্ব রেল। রেল সূত্রের খবর, স্টেশনে যা পরিকাঠামো রয়েছে, তাতে ট্রেনের এই সংখ্যা অনেকটাই বেশি। প্রায়শই কারশেড থেকে ট্রেন আনা নেওয়া করতে গিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয় রেলকর্তাদের। মাঝেমধ্যে দেরি হয় ট্রেনের। ভবিষ্যতে আরও ট্রেন বাড়াতে গেলে তখন নতুন করে সমস্যা তৈরি হবে। কিন্তু এই দু’টি টার্মিনাল স্টেশন তৈরি হয়ে গেলে ওই অসুবিধা অনেকটাই চলে যাবে বলে মনে করছেন রেলকর্তারা।