পূর্ত দফতরেরই হাতে নির্মাণ কাজ

নবান্নের সিদ্ধান্ত— যে সব দফতরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ রয়েছে, তারা নিজেরাই যে কোনও নির্মাণ কাজ করতে পারবে। এই তালিকায় রয়েছে সেচ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন ও আবাসনের মতো গুটি কয়েক দফতর। নির্মাণ কাজ করাতে হবে পূর্ত দফতরের মাধ্যমে বাকি সব দফতরকে। পূর্ত দফতর যদি কাজ করতে অপারগ হয়, তবেই একমাত্র সংশ্লিষ্ট দফতর দরপত্র ডেকে বাইরের সংস্থাকে দিয়ে কাজ করাতে পারবে।

Advertisement

অত্রি মিত্র

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:০৯
Share:

ফাইল চিত্র।

সময়ে নির্মাণ কাজ শেষ করতে এক সময় ‘যার কাজ সে-ই করবে’ নীতি চালু করেছিল রাজ্য সরকার। বলা হয়েছিল— কাজের বিকেন্দ্রীকরণ। পাঁচ বছরও কাটেনি, পূর্ত দফতরের ঘাড়ে যাবতীয় দায়িত্ব চাপিয়ে ফের আগের নিয়মে ফিরে গেল সরকার।

Advertisement

নবান্নের সিদ্ধান্ত— যে সব দফতরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ রয়েছে, তারা নিজেরাই যে কোনও নির্মাণ কাজ করতে পারবে। এই তালিকায় রয়েছে সেচ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন ও আবাসনের মতো গুটি কয়েক দফতর। নির্মাণ কাজ করাতে হবে পূর্ত দফতরের মাধ্যমে বাকি সব দফতরকে। পূর্ত দফতর যদি কাজ করতে অপারগ হয়, তবেই একমাত্র সংশ্লিষ্ট দফতর দরপত্র ডেকে বাইরের সংস্থাকে দিয়ে কাজ করাতে পারবে।

কেন ‘বিকেন্দ্রীকরণ’ থেকে এই সরে আসা? সরকারের যুক্তি, আগের নিয়মে কাজে স্বচ্ছতার অভাব ছিল। পর্যাপ্ত নজরদারিও হতো না। পূর্ত দফতরের মাধ্যমে কাজ করালে স্বচ্ছতা ও নজরদারি— দুই-ই রক্ষা করা সম্ভব। অর্থ দফতরের এক মুখপাত্র জানান— দরপত্র চাওয়া থেকে সংস্থা নির্বাচন, কাজের সমন্বয় ও নকশা মেনে কাজ করা নিয়েও নানা অভিযোগ উঠছিল। কাজ পাইয়ে দিতে অর্থ লেনদেনের অভিযোগও উঠেছে কিছু দফতরের বিরুদ্ধে।

Advertisement

যেমন, সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর। গত সোমবার প্রশাসনিক বৈঠকে এই দফতরের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা যে পদ্ধতি মেনে সংস্থা চূড়ান্ত করেছে, তা ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিযোগ। নবান্নের খবর, এ সব দেখেই মুখ্যমন্ত্রী পুরনো ব্যবস্থায় ফিরে পূর্ত দফতরকে দিয়ে সব কাজ করাতে নির্দেশ দেন।

আরও পড়ুন: মেয়রের সঙ্গেই রক্ষীদের জেরা সিবিআইয়ের

সরকারি সূত্রের খবর, ২০১২ সালে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সরকার জানিয়েছিল, ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ রয়েছে এমন দফতর বাদে বাকি সব দফতরকে কাজ করাতে হবে রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের নির্মাণ সংস্থাকে দিয়ে। কেন্দ্র বা রাজ্যের কোন কোন সংস্থাকে দিয়ে ওই কাজ করানো যাবে, তার তালিকাও করে দেওয়া হয়েছিল। এই সব সংস্থাই সংশ্লিষ্ট দফতরের হয়ে কাজের পরিকল্পনা থেকে নির্মাণের কাজ করত ‘ফি’-র বিনিময়ে ।

প্রশ্ন উঠেছে, একা পূর্ত দফতর কতটা করতে পারবে? প্রশাসনের একাংশের দাবি, এতে কাজের গতি কমতে বাধ্য। কারণ পূর্ত দফতরের যা পরিকাঠামো, তাতে সব দফতরের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া পূর্ত দফতরের বিরুদ্ধেও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে বার বার। আবার প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘পূর্তমন্ত্রী এখন মুখ্যমন্ত্রীর আস্থাভাজন অরূপ বিশ্বাস। তাঁর হাতে দায়িত্ব থাকলে কাজ ভাল হবে বলে হয়তো মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement