ডলফিনের দেহ খালে ভাসতেই ছবির হিড়িক 

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী রসুলপুর নদী পেরিয়ে ওড়িশা কোস্ট ক্যানাল এবং কালীনগর-ইটাবেড়িয়া খাল হয়ে বিপন্ন প্রজাতির ওই ‘গ্যাঞ্জেটিক ডলফিন’টি ঢুকে পড়েছিল দাঁড়িয়াদিঘি-উদবাদাল খালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৪১
Share:

মৃত ডলফিনের সঙ্গে চলছে ছবি তোলা। শনিবার কাঁথিতে। নিজস্ব চিত্র

দু’দিন ধরে এ দিক-ও দিক ছুটে বেড়ানোর পরে খালের ঘোলা জলে ভেসে উঠল পথভোলা ডলফিনের দেহ। সেই দেহের সঙ্গে নিজস্বী আর ছবি তোলার হিড়িকও চলল পুরোদমে। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির এই ঘটনা আবারও প্রশ্ন তুলে দিল এক শ্রেণির মানুষের সচেতনতা, সংবেদনশীলতা নিয়ে। প্রশ্নের মুখে পড়ল বন দফতরের পরিকাঠামোও।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী রসুলপুর নদী পেরিয়ে ওড়িশা কোস্ট ক্যানাল এবং কালীনগর-ইটাবেড়িয়া খাল হয়ে বিপন্ন প্রজাতির ওই ‘গ্যাঞ্জেটিক ডলফিন’টি ঢুকে পড়েছিল দাঁড়িয়াদিঘি-উদবাদাল খালে। উদবাদাল সেতুর কাছে বিশালকার প্রাণীটির সাঁতার কাটার খবর ছড়াতে দেরি হয়নি। সংকীর্ণ খালের দু’পাড়ে ডলফিন দেখার ভিড় জমতে শুরু করেছিল।

সেই ভিড় ঠেলেই শুক্রবার খালে স্পিডবোট নিয়ে নেমে বনকর্মীরা ডলফিনটিকে তাড়া করে কালীনগর হয়ে বঙ্গোপসাগরের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শান্ত, ভিতু সামুদ্রিক প্রাণী স্পিডবোটের শব্দ আর খালের দু’পাড়ে লোকের ভিড় দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। সমুদ্রের দিকে না গিয়ে উল্টোপথে ইটাবেড়িয়ার দিকে এগোতে থাকে সে। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় শুক্রবারের মতো অভিযান বন্ধ করে দেন বনকর্মীরা। শনিবার সকালে ইটাবেড়িয়া থেকে সামান্য আগে নেতুড়িয়ায় ভাসতে দেখা যায় ডলফিনের দেহ। সেই দেহ ডাঙায় তুলতেই শুরু হয় তার সঙ্গে ছবি তোলার হিড়িক। ঠিক যেমনটা হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের চাঁদড়ার বাঘঘোরার জঙ্গলে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ‘খুনে’র পরে।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বন আধিকারিক স্বাগতা দাস বলেন, ‘‘ডলফিন উদ্ধারের মতো পরিকাঠামো আমাদের ছিল না। প্রাণীটিকে সমুদ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাড়া করা হচ্ছিল। সেই চেষ্টা শুক্রবার ব্যর্থ হয়েছে। শনিবার ফের চেষ্টা করা হত। কিন্তু তার আগেই ডলফিনটি খালের দূষিত জল এবং খাবারের সঙ্কটে মারা গিয়েছে।’’ সহ-মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগের কথায়, ‘‘এই ধরনের ডলফিন অত্যন্ত স্পর্শকাতর। বিশেষজ্ঞ না রেখে এ ভাবে ডলফিনকে সমুদ্রের নিয়ে যাওয়ার পদ্ধতি কতটা ঠিক, তা-ও দেখতে হবে। আগামী দিনে বন দফতরকে সজাগ থাকতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন