Lovely Maitra

শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন, প্রাক্তন বিধায়কের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা বর্তমানের

অরুন্ধতীর আইনজীবীর অভিযোগ, গত ডিসেম্বরে সোনারপুর (দক্ষিণ)-এর বিধায়ক অরুন্ধতী মৈত্র (লাভলি)- এর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন জীবন।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৩ ০৬:৪৬
Share:

সোনারপুর (দক্ষিণ)-এর বিধায়ক অরুন্ধতী মৈত্র (লাভলি)। ছবি: সংগৃহীত।

শাসকদলের প্রাক্তন বিধায়কের বিরুদ্ধে আর্থিক ক্ষতিপূরণ-সহ আদালতে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন বর্তমান বিধায়ক। সেই মামলায় সশরীরে উপস্থিত হওয়ার জন্য প্রাক্তন বিধায়কের বিরুদ্ধে সমন জারি করল আদালত।

Advertisement

কার্যত নজিরবিহীন এই ঘটনা ঘটেছে সোনারপুরে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি সোনারপুর (দক্ষিণ)-এর বিধায়ক অরুন্ধতী মৈত্র (লাভলি) বারুইপুর আদালতে ওই কেন্দ্রেরই প্রাক্তন বিধায়ক জীবন মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আর্থিক ক্ষতিপূরণ-সহ মানহানির মামলা দায়ের করেছেন।

ঘটনাটি ঠিক কী? আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে সোনারপুর মহাবিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি ছিলেন জীবন। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে সোনারপুর (দক্ষিণ) কেন্দ্র থেকে জয়ী হন অরুন্ধতী। গত বছর সোনারপুর মহাবিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির মেয়াদ ফুরোলে রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে সেখানে সভানেত্রী পদে মনোনীত হন তিনি।

Advertisement

অরুন্ধতীর আইনজীবীর অভিযোগ, এর পরেই গত ডিসেম্বরে অরুন্ধতীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন জীবন। তাঁর বক্তব্য ছিল, শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী অরুন্ধতী কখনওই শিক্ষাবিদ নন। তাই তাঁকে কলেজের পরিচালন সমিতির সভানেত্রী মনোনীত করা ঠিক কাজ হয়নি। তবে জীবনের ওই আবেদন খারিজ করে আদালত।

অরুন্ধতীর আইনজীবীর আরও বক্তব্য, তাঁর মক্কেলের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক। তিনিএক জন বিধায়ক। পাশাপাশি, পেশাগত দিক থেকে অভিনেত্রী। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সামাজিক সম্মানহানি করা হয়েছে। অভিযোগেঅরুন্ধতীর আইনজীবী এ-ও জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেলের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেকলকাতা হাই কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করার পরে ওই বিষয়টি সোনারপুর (দক্ষিণ) বিধানসভা এলাকা-সহ নানা সরকারি দফতরেও প্রচার করেছেন জীবন। বারুইপুর আদালত সূত্রের খবর, অরুন্ধতীর করা মামলাটি গ্রহণ করেছেন দায়রা বিচারক।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মামলায় গত ২৩ জুন জীবনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন বিচারক। তবে তিনি সশরীরে হাজির না হয়ে তাঁর আইনজীবী মারফত বক্তব্য জানাতে পারেন বলেও সমনে‌ শর্ত দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনে দলের তরফে জীবনকে টিকিট দেওয়া হয়নি। তাঁর বদলেমনোনয়ন দেওয়া হয় অরুন্ধতীকে। তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, ভোটে জিতে অরুন্ধতী বিধায়ক হওয়ার পর থেকেই সোনারপুর (দক্ষিণ) বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁর এবং জীবনের গোষ্ঠীর মধ্যে ঠান্ডালড়াই শুরু হয়। অনেকে বলছেন, সোনারপুর মহাবিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি পদ থেকে জীবনকে সরিয়ে দেওয়ার পরে সেই ঠান্ডা লড়াই আদালতেগিয়ে পৌঁছেছে।

জীবনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলার বিষয়ে অরুন্ধতী বলেন, ‘‘প্রথমত, বিধায়ক পদে লড়ার জন্য আমাকে টিকিট দিয়েছিল দল। দ্বিতীয়ত, সোনারপুরমহাবিদ্যালয়ের‌ পরিচালন সমিতির সভাপতি মনোনয়নের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবে রাজ্য সরকারের অধীনে। আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা বিচার করেই ওই পদে মনোনয়ন দেওয়াহয়েছে। জীবনবাবু আমার বিরুদ্ধে মামলা করে সামাজিক সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। মামলার খরচ চালাতে গিয়ে আমার লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। আমার সঙ্গে কারও ঠান্ডা লড়াই নেই।’’

গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে প্রাক্তন বিধায়ককে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এটা বিচারাধীন বিষয়। তাই কোনও মন্তব্য করব না। যা জানানোর, আদালতে জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন