পুরভোটে পারেননি। মহকুমা পরিষদও দখল করতে পারলেন না। তা হলে উত্তরের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী নেতা-মন্ত্রী হিসেবে পরিচিত গৌতম দেব করছেনটা কী, তা নিয়ে এখন সরগরম তৃণমূলের অন্দর মহল। তৃণমূল শিবিরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, গৌতমবাবুর একাধিক পদ থেকে সরতে হতে পারে। তাঁর একান্ত ঘনিষ্ঠরাও শুনতে পাচ্ছেন গৌতমবাবুর গলায় বিষণ্ণতার সুর।
যেমন তৃণমূলের প্রদেশ স্তরের এক নেতা একান্তে বলছেন, গৌতম নিজে থেকেই জেলা সভাপতি পদ থেকে সরে যেতে চাইছেন। আবার সম পর্যায়ের কোনও নেতার মত, এসজেডিএ সহ নানা সংস্থার চেয়ারম্যান, মন্ত্রী পদ ছেড়ে গৌতমবাবু সংগঠনে আরও মন দিলে বিধানসভায় ভাল ফল হবে। গৌতমবাবুর বিরুদ্ধ শিবিরের আশা, এই হারের পরে গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই কোনও ‘ব্যবস্থা’ নেবেন দলনেত্রী। তবে এ দিন ভুটানের থিম্পুতে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোটের ফলে অন্তত প্রকাশ্যে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দলনেত্রী সত্যিই এই ফলাফলে খুশি কি না, তা নিয়ে অবশ্য যথেষ্টই সন্দিহান তৃণমূলের গৌতম-বিরোধী শিবির।
এই পরিস্থিতির কথা অজানা নয় ষাটের কোঠায় পা রাখা গৌতমবাবুরও। তাঁর কথায়, ‘‘কে, কী বলছেন জানি না। শিলিগুড়ি পুরবোর্ড কেন পাইনি, তা দলনেত্রী জানেন। বিরোধীদের অলিখিত জোটের সঙ্গে লড়তে হয়েছে এ বার। তবু মহকুমা পরিষদে আগের থেকে অনেক ভাল ফল করেছি।’’ সেখানে তৃণমূল শূন্য থেকে শুরু করে মহকুমা পরিষদের ৩টি আসন পেয়েছে। ২টি আসনে ১ হাজারের কম ভোটে হেরেছে তারা। ৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত পেয়েছে। গৌতমবাবুর কথায়, ‘‘২টি পঞ্চায়েত সমিতি পাব। আরও ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতও পাব।’’
কিন্তু দলের জেলা সভাপতির পদ থেকে কি আপনাকে সরানো হতে পারে? গৌতমবাবুর জবাব, ‘‘১৩ বছর ধরে সভাপতি হিসেবে দল চালাচ্ছি। আমারও তো বয়স হচ্ছে। নতুন কাউকে দিলে তো ভালই। যাই হোক, দলনেত্রী যখন যা দায়িত্ব দিয়েছেন পালনের চেষ্টা করেছি। আগামী দিনেও তাঁর নির্দেশই শিরোধার্য।’’