ভোটে সন্ত্রাস নিয়ে রাজ্য যখন উত্তাল, সেই সময় তৃণমূল সাংসদ কে ডি সিংহকে সামনে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আরও চাপ বাড়ানো শুরু করল সিপিএম।
দিল্লিতে আজ ইডি-র এক শীর্ষ কর্তার সঙ্গে দেখা করেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে সাড়ে তিনশো পাতার অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। এ ছাড়া সিবিডিটি চেয়ারম্যান, কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের আর্থিক বিষয়ক সচিবের সঙ্গেও দেখা করে একই অভিযোগ জানান সেলিম। এর আগে তিনি সেবির কর্তাদের সঙ্গেও দেখা করেছেন। কেডির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে চিঠি লিখেছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকেও। তবে অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ আখ্যা দিয়ে কে ডি সিংহের পক্ষ থেকে এ দিন বলা হয়েছে, ‘‘কোনও রকম প্রমাণ ছাড়াই এ সব অভিযোগ আনা হচ্ছে। অ্যালকেমিস্ট আইন মেনে চলা সংস্থা। এই গোষ্ঠী দেশের কোথাও বেআইনি আর্থিক লেনদেন করেনি। তৃণমূল সাংসদের ভাবমূর্তি খারাপ করতে এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে আসার চেষ্টা দুর্ভাগ্যজনক।’’
তবে সেলিমের দাবি, ‘‘ইডির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাঁরা তাঁদের কাজ করছেন। কেডি সিংহের বিরুদ্ধে যা অভিযোগ রয়েছে, সেটি তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথেষ্ট।’’ সিপিএম দাবি করেছে, লগ্নি সংস্থা কাণ্ডে কেডি-র সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হোক। তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নিলামের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের টাকা ফেরত দেওয়া হোক।
সেলিমের দাবি, মাস তিনেক আগে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি লেখার পর অনেক ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ সিপিএমের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু রাজ্য পুলিশ এফআইআর গ্রহণ করেনি। এফআইআর না হলে ইডির পক্ষে আগ বাড়িয়ে হস্তক্ষেপ করাও মুশকিল। সেলিম আজ ইডির কাছে অভিযোগ করেন, ঝাড়খণ্ডে কে ডি-র বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। সেই নথিও পেশ করেন তিনি। তার পর সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‘যদি রাজ্য পুলিশ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের এফআইআর না নেয়, তা হলে আদালতের দ্বারস্থ হতে প্রস্তুত সিপিএম ও বিভিন্ন সংগঠন।’’
সিপিএমের মতে, কে ডি সিংহ মমতার ঘনিষ্ঠ। উত্তর ও উত্তর-পূর্বের ১৩টি রাজ্যে দলের দায়িত্ব মমতা তাঁর হাতে তুলে দিয়েছেন। ফলে রাজ্যের মানুষের টাকা ভিন রাজ্যে গিয়েছে কি না, বিদেশ থেকে আসা টাকা তৃণমূলের কাজে ব্যবহার হয়েছে কি না— তা নিয়ে তদন্ত করতে এই সব সংস্থার সাংবিধানিক ও আইনি ক্ষমতা রয়েছে বলেই মনে করেন সিপিএম সাংসদ। তবে তাঁর কটাক্ষ,‘‘এখন দিদিভাই ও মোদীভাই-এর মধ্যে ঘনিষ্ঠতা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অনেক সময়ে মুখ খোলেন। কিন্তু এই বিষয়ে নীরব মোদীর থেকে এখনও রাজনৈতিক ছাড়পত্র পায়নি তদন্তকারীরা।’’