ছবি: পিটিআই।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতির জন্য কেন্দ্রীয় সাহায্য পাওয়া নিয়ে বিতর্ক মঙ্গলবার বড় মাত্রা নিল।
বুলবুলের পরে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্র কোনও আর্থিক সাহায্য দেয়নি বলে সোমবারই বিধানসভায় অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ২৪ ঘণ্টা পরে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই লোকসভায় লিখিত জবাবে জানালেন, ‘‘বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির দুর্গত এলাকা ঘুরে দেখতে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় দল। কিন্তু তার পরে কোনও রাজ্য কেন্দ্রের কাছে ওই খাতে অতিরিক্ত কোনও টাকা চায়নি।’’ বুলবুলের পরে ক্ষয়ক্ষতি ও পুনর্বাসনের প্রশ্নে কেন্দ্র কী পদক্ষেপ করেছে, তা জানতে চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে প্রশ্ন করেন মালা রায়, বিদ্যুতবরণ মাহাতো ও সুধীর গুপ্ত। তার জবাবেই নিত্যানন্দ ওই তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি আরও জানান, ‘‘২০১৯ সালের ১ এপ্রিল রাজ্য বির্পযয় মোকাবিলা তহবিলে (এসডিআরএফ) খাতে ২৬৪.৭০ কোটি টাকা ছিল। চলতি আর্থিক বছরে (২০১৯-২০) কেন্দ্র তার অংশের ৪১৪.৯০ কোটি টাকা আরও ওই তহবিলে জমা করে।’’
যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দেওয়ার ওই হিসেবকে ‘অসত্য’ বলে দাবি করে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ফণী ঘূর্ণিঝড়ের দিন কুড়ি পরে এই বছরের এপ্রিলে ৪১৫ কোটি টাকা কেন্দ্র পাঠিয়েছিল। কেন্দ্র নিয়মিত যে টাকা পাঠায়, ওটা সেই টাকা। আলাদা ভাবে ফণীর জন্য ওই টাকা পাঠায়নি। একই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ওড়িশাকেও টাকা দেওয়া হচ্ছে। তখন বুলবুল কোথায়?’’ এ রাজ্যে তিন উপনির্বাচনের তিনটিতেই হারের পরে কেন্দ্রীয় শাসক দল বিজেপি মানুষকে বিভ্রান্ত করতে এ ধরনের অসত্য তথ্য দিচ্ছে বলে চন্দ্রিমার অভিযোগ।
আরও পড়ুন: সন্তানদের মুখ চেয়ে ‘শত্রুতা’ ভুলে বিয়ের পিঁড়িতে
রাজ্যের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বুলবুল নিয়ে অসত্য কথা বলার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে বিধানসভাতেই ক্ষমা চাইতে হবে। বুলবুলের জন্য রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে লিখিত ভাবে কোনও সাহায্য চায়নি।’’ বুলবুল-ত্রাণে মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় বাম এবং কংগ্রেস বলেছে, সর্বদল বৈঠক ডেকে সরকার প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির হিসেব দিক। তার পর তারাও রাজ্যের স্বার্থে সরকারের হয়ে কেন্দ্রের কাছে বুলবুল-সাহায্যের দাবি জানাবে।
এ দিকে, লোকসভায় বুলবুল-প্রশ্নে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ লিখিত জবাব দিলেও, কেন্দ্রের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি) বিবৃতি দিয়ে জানায়, লোকসভায় এ দিন ওই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষেণ রেড্ডি। বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে প্রশ্ন করা হলে অস্বস্তিতে পড়ে যান মন্ত্রকের ‘মিডিয়া’ দফতর। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, লোকসভায় যখন নিত্যানন্দ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন, তখন পিআইবি-র বিবৃতিকে তাঁর বক্তব্য হিসাবেই ধরুক সংবাদমাধ্যম।