পিটিআইয়ের তোলা প্রতীকী ছবি।
বিদেশ থেকে ফেরার পরে যথেষ্ট সাবধানতা নেননি ডাক্তারবাবু নিজেই। দিব্যি রোগী দেখছিলেন। বিদেশ থেকে ফিরেছেন বলেও প্রথমে মানতে চাননি। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় ক্ষুব্ধ বসিরহাটের মানুষ। শুক্রবার রাতে বসিরহাটের ওই নার্সিংহোমের মালিক তথা চিকিৎসককে হাসপাতালে পাঠাতে হাজির হয় পুলিশ। প্রথমে যেতে চাননি ডাক্তারবাবু। এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করায় পরে অবশ্য বসিরহাটে হাসপাতালে যান। সেখানে তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়। তাঁকে ১৪ দিন হোম কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। তাঁর নার্সিংহোমে ভর্তি পাঁচ জন সদ্য প্রসূতি ও তাঁদের সন্তানকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে। পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আরও অন্তত ৪১ জনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, সম্প্রতি যাঁদের চিকিৎসা করেছিলেন ওই চিকিৎসক। তাঁদের খোঁজ চলছে বলে জানান বসিরহাট জেলার সুপার শ্যামল হালদার।। এ দিন নার্সিংহোমটিও সিল করে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৭ মার্চ আমেরিকা থেকে বিমানবন্দরে নামেন ওই চিকিৎসক। সেখানে পরীক্ষার পরে যান কলকাতায় রুবি মোড়ের কাছে নিজের হাউসিংয়ে। পুলিশের দাবি, কলকাতায় কয়েকটি নার্সিংহোমে চেম্বারে রোগী দেখে বৃহস্পতিবার ফেরেন বসিরহাটে। সেখানে অস্ত্রোপচার করেন। শুক্রবার বসিরহাট, বাদুড়িয়া ও হঠাৎগঞ্জে কয়েক জন রোগীর চিকিৎসা করেন। বিষয়টি জানাজানি হতেই ক্ষোভ ছড়ায় বসিরহাটে। পুলিশকে সব জানানো হয়। পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, ওই চিকিৎসক তাদের কার্যত কোনও সহযোগিতা করেননি। তাঁর ম্যানেজারের দাবি, ডাক্তারবাবু বিদেশে নয়, গিয়েছিলেন বেঙ্গালুরু। বিমানবন্দর থেকে নামার পরে তাঁকে সুস্থ থাকার শংসাপত্রও দেওয়া হয়েছিল।
এক জন চিকিৎসক হয়ে কী ভাবে এই কাণ্ড ঘটালেন, তা নিয়ে বিস্মিত বসিরহাটের বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস, পুরপ্রধান তপন সরকাররা। তপন বলেন, ‘‘বিদেশ থেকে ফিরে কোয়রান্টিনে না-গিয়েচরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন উনি।’’ ওই চিকিৎসকের নার্সিংহোমে ৩ রোগিনীর অস্ত্রোপচার করেছিলেন আর এক চিকিৎসক সুধাংশু ঘোষ। শনিবার ওই রোগিনীদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে এসে সুধাংশু বলেন, ‘‘এ কাজ করার আগে ওঁর একটু ভাবার দরকার ছিল!’’
আরও পড়ুন: বিদেশ ফেরত, খবর পেয়ে পদক্ষেপ কমলের