প্রতীকী ছবি।
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ থেকে বেড়ে দাঁড়াল ১৮। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কলকাতার নয়াবাদের বাসিন্দা এক বৃদ্ধের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছিল। পঞ্চসায়রের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই বৃদ্ধ সপরিবার এগরায় এক আত্মীয়ের ছেলের বিয়েতে গিয়েছিলেন। সেই আত্মীয়ের স্ত্রী (৫৬) এবং পিসির (৭৬) দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। নাইসেড সূত্রে খবর, এ দিনের তৃতীয় আক্রান্ত উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা এক মধ্যবয়সি মহিলা।
ওই বেসরকারি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্তা সিঞ্চন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, বৃদ্ধের শারীরিক অবস্থার আর অবনতি হয়নি। তবে ফুসফুস সক্রিয় না-হওয়ায় এখনও তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখতে হয়েছে। মূত্রের মাত্রা ঠিক রয়েছে কি না, তা নজরে রাখা হচ্ছে।
নাইসেড সূত্রে খবর, কালিম্পংয়ের বাসিন্দা ওই মহিলার চেন্নাই-যোগ রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরেরও খবর, চেন্নাই থেকে রাজ্যে ফেরার পরে মহিলার প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসকেরা ভর্তি করেন। এখনও পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে নমুনা সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। সে কারণে এ দিন মহিলার নমুনা পরীক্ষার জন্য নাইসেডে পাঠানো হয়। রিপোর্টে করোনা-পজ়িটিভ ধরা পড়ে।
রাজ্যের চিত্র
মোট আক্রান্ত ১৮
আইসোলেশন ১৭১
নমুনা সংগ্রহ ৫৯
গৃহে পর্যবেক্ষণ ৩৫,০১৫
অন্য আক্রান্তদের নিরিখে উত্তরবঙ্গের ঘটনা কিছুটা আলাদা। বাকিদের ক্ষেত্রে যে-ভাবে করোনা উপসর্গ ধরা পড়ছে, এ ক্ষেত্রে তা ঘটেনি। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানান, করোনা-নজরদারির অঙ্গ হিসেবে ‘সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস’ নামে কর্মসূচি চলছে। সরকারি বা বেসরকারি স্তরে কোনও রোগী প্রবল শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। কিন্তু সেই অসুস্থতার কারণ বোঝা যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে ওই রোগীর নমুনাও পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেই সূত্রেই মহিলার দেহে ‘কোভিড ১৯’-এর অস্তিত্ব মিলেছে।
গত ১৩ মার্চ ভায়রাভাইয়ের ছেলের বিয়েতে যোগ দিতে স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধূ এবং নাতনিকে নিয়ে এগরা গিয়েছিলেন ওই বৃদ্ধ। প্রীতিভোজে আমন্ত্রিতদের তালিকায় ভিন্ রাজ্যের অতিথিদের পাশাপাশি আমেরিকা এবং সিঙ্গাপুরের প্রবাসী আত্মীয়েরাও ছিলেন। এখনও পর্যন্ত কার বা কাদের সংস্পর্শে বৃদ্ধের দেহে ভাইরাস এল, তা জানা যায়নি। নতুন দুই আক্রান্তের সংস্পর্শের ইতিহাস ঘেঁটে তা জানার চেষ্টা করছে স্বাস্থ্য দফতর। দুই আক্রান্তের মধ্যে ভায়রাভাইয়ের পিসি আবার নরেন্দ্রপুরের বাসিন্দা। আজ, শনিবার বৃদ্ধের ভায়রাভাইয়ের স্ত্রী এবং পিসিকে কলকাতায় আনা হবে। কলকাতায় এম আর বাঙুরে বৃদ্ধের স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধূ, নাতনি এবং পরিচারিকাকে ভর্তি করিয়ে নমুনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। তাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। রাজ্যের প্রথম করোনা আক্রান্ত মৃত প্রৌঢ়ের সংস্পর্শে আসা আরও তিন জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টেও কিছু
পাওয়া যায়নি।
বাঙুর হাসপাতাল এ দিন নতুন করে ১১ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে। আপাতত তিনটি নমুনার রিপোর্টের দিকে স্বাস্থ্য ভবনের নজর রয়েছে। সেনা হাসপাতালের এক চিকিৎসক সম্প্রতি দিল্লি থেকে ফিরে অসুস্থ হয়েছেন। তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
ওই চিকিৎসকের যা উপসর্গ রয়েছে তাতে এবং বিশেষত তিনি দিল্লি থেকে ফেরায় স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকেরা উদ্বিগ্ন। তাঁর পাশাপাশি মিশর-যোগে আক্রান্তের স্ত্রী ও সন্তানের দ্বিতীয় দফায় নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে কী ধরা পড়ে, সে দিকেও তাকিয়ে স্বাস্থ্য ভবন।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)