Coronavirus

করোনা সংক্রমণ সামলাতে ডাক্তারদের আবেদন

কমিশনের বক্তব্য, ভিড়ের কারণে রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৩৪
Share:

ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তাররা। ছবি পিটিআই।

কোভিডের সঙ্গে লড়াইয়ে আট মাসের ক্লান্তি কি আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে? গত দশ দিনে রাজ্যে সংক্রমণের রেখাচিত্র পর্যালোচনা করে সরকারি-বেসরকারি সব স্তরে কোভিড পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্তা-চিকিৎসকেরা পুজোর মুখে আক্রান্তের সংখ্যায় কয়েক গুণ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছেন। সেই পূর্বাভাসে কোভিড ওয়ার্ডে গত ২৪০ দিন ধরে কর্মরত চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের ‘ক্লান্তিকর পরিশ্রম’ যে উদ্বেগের কারণ, বুধবার স্বাস্থ্য কমিশনের দু’টি বার্তায় তার আভাস মিলেছে।

Advertisement

এ দিন স্বাস্থ্য কমিশনের প্রথম আবেদনে বেসরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের পুজোর সময় শহরে থাকার আর্জি জানানো হয়েছে। যাতে সংক্রমণ বৃদ্ধির পূর্বাভাস সত্যি হলে চিকিৎসকেরা দ্রুত চিকিৎসায় নিযুক্ত হতে পারেন। দ্বিতীয় আবেদনে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবায় করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা কম বয়সের নাগরিকদের স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করার আবেদন জানিয়েছে কমিশন।

এ দিনই রাজ্যে চব্বিশ ঘণ্টায় সংক্রমণের সংখ্যা (৩৬৭৭) সর্বোচ্চ তো বটেই, করোনায় মৃত্যুতেও এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ (৬৪) রেকর্ড তৈরি হয়েছে। কলকাতায় ২৩ জুলাইয়ের এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭৯৫ জন। আড়াই মাস পরে এ দিন কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭৯৪। উত্তর ২৪ পরগনায় চব্বিশ ঘণ্টায় ৭৫২ জনের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। নমুনা পরীক্ষার নিরিখে রাজ্যে কেস পজ়িটিভিটির হার হল ৮.৬৭ শতাংশ।

Advertisement

কমিশনের বক্তব্য, ভিড়ের কারণে রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আট মাস ধরে কোভিড চিকিৎসার মূল দায়িত্ব মেডিসিন, সিসিইউ এবং বক্ষ রোগের বিশেষজ্ঞরা ‘নিরলস ভাবে’ পালন করে চলেছেন। চক্ষু, চর্ম, প্লাস্টিক সার্জারির চিকিৎসকদের ব্যস্ততা তুলনামূলক কম ছিল। কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘হঠাৎ রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু দিতে অসুবিধা হতে পারে। তাই সব ডাক্তারবাবুকে শহরে থাকার আবেদন জানাচ্ছি।’’

ক্লান্ত বেসরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরাও। তাই পরিস্থিতি সামলাতে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসায় করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা অল্পবয়সি রোগীদের একটি তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। কমিশনের বক্তব্য, ‘‘এ ধরনের ব্যক্তিদের যেহেতু সংক্রমণের ভয় নেই, তাই সেবা ধর্মে ব্রতী হওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।’’

কার্ডিয়োথোরাসিক সার্জন কুণাল সরকার বলেন, ‘‘কার্যত বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা ছুটিতে যাচ্ছেন না। কিন্তু উৎসব-উন্মাদনাকে যে ভাবে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, তার সঙ্গে কমিশনের উদ্বেগ বড় বেমানান!’’ চিকিৎসক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চের যুগ্ম-আহ্বায়ক পুণ্যব্রত গুণের কথায়, ‘‘দীর্ঘদিন যাঁরা চোখ, কান, ত্বকের চিকিৎসা করছেন তাঁদের পক্ষে রোগীকে কখন অ্যান্টি ভাইরাল, কখন স্টেরয়েড দিতে হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। পুজোয় জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে আমাদের পরামর্শ শুনলে আবেদন জানাতে হত না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন