নথি যাচাই না-হলে কি আরও দুর্নীতি

নথি যাচাই না করে ভর্তির ব্যবস্থা যে পরে বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে, সেটা বেলদা থেকে শিলিগুড়ি, অনেকেই মেনে নিচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৮ ০৫:০৮
Share:

শিলিগুড়ির অনেক কলেজে নথি যাচাই বা ভেরিফিকেশন পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। —ফাইল চিত্র।

রাজ্য শিক্ষা দফতর নির্দেশ পাঠিয়েছে তিন দিন আগে। তার পরেও শিলিগুড়ির অনেক কলেজে নথি যাচাই বা ভেরিফিকেশন পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। একই ছবি দেখা গিয়েছে বর্ধমানের রাজ কলেজ এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা কলেজেও। এখনও কেন এই প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ? জবাবে প্রায় সকলেই বলছেন, নথি যাচাই না হলে দুর্নীতির আশঙ্কা আরও বেড়ে যাবে।

Advertisement

কী ভাবে?

শিলিগুড়ি সূর্য সেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রণব মিশ্র বলেন, ‘‘নথি যাচাই না করলে দুর্নীতির আশঙ্কা জোরদার হয়। তাই ওই প্রক্রিয়া চালাচ্ছি। যথাসময়ে বন্ধ করে দেওয়া হবে।’’ প্রণববাবুর মতো প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি শিলিগুড়ির অন্য কলেজগুলির অধ্যক্ষরা। তবে তাঁদের যুক্তি, ‘‘এখনকার নিয়মে তো মার্কশিট, অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথিই দেখার সুযোগই থাকছে না। যে যা নম্বর দাবি করছে, ভর্তির আগে তা খতিয়ে দেখা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে দুর্নীতি হতেই পারে।’’

Advertisement

এই যুক্তিতেই নথি যাচাইয়ের কাজ চালিয়ে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা কলেজও। সেই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি আবার রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। স্নাতকস্তরে ভর্তি হওয়ার জন্য এ দিন ছাত্রছাত্রীদের যাবতীয় নথি-সহ কলেজে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে নথি যাচাই করে ভর্তি প্রক্রিয়া চলে। কেন এই নিয়মভঙ্গ, জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ মানবেন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের নির্দেশ আসার আগেই আমাদের দিনক্ষণ ঠিক হয়ে গিয়েছিল।’’ যদিও সেচমন্ত্রীর দাবি, ‘‘ওঁরা ভুল করেছেন।’’

একই ভাবে নথি যাচাই চলেছে বর্ধমানের রাজ কলেজেও। খবর পেয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল সেই কলেজে যায়। সেখানে গিয়ে তাঁরা নিজের চোখেই সব দেখেন। অধ্যক্ষর সঙ্গে তাঁদের কিছুটা কথা কাটাকাটি হয় বলেও অভিযোগ। পরে তাঁরা বলেন, ‘‘নথি যাচাই বন্ধ রাখারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।’’ অধ্যক্ষ নিরঞ্জন মণ্ডলের দাবি, ‘‘কোনও অনৈতিক কাজ করিনি।’’

নথি যাচাই না করে ভর্তির ব্যবস্থা যে পরে বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে, সেটা বেলদা থেকে শিলিগুড়ি, অনেকেই মেনে নিচ্ছেন। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক বলেন, ‘‘দুর্নীতি রুখতে যে বজ্র আঁটুনি তৈরির কথা হচ্ছে, তার ফস্কা গেরো এটাই।’’ তা হলে এই মুহূর্তে এর প্রতিকার কী? ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কাউন্সিলের সচিব নূপুর দাস বলেন, ‘‘অনলাইন সমস্ত ভর্তি ‘প্রভিশনাল’ হওয়া উচিত। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আবেদনকারীর মার্কশিট ও পরিচয়পত্র অনলাইনে আপলোড বাধ্যতামূলক হওয়া জরুরি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন