প্রতীকী ছবি।
কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, কেউ গবেষক, কেউ আবার ইঞ্জিনিয়ার। স্কুল পাঠ্যক্রমের ভিতরের বিষয়গুলিকে পড়ুয়াদের কাছে আরও সহজ ভাবে তুলে ধরতে উদ্যোগী হয়েছেন এমনই ১৪ জন। রাজ্যের বিভিন্ন স্কুল তো বটেই, বিএড কলেজগুলিতেও যাচ্ছেন তাঁরা। উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, ভবিষ্যতের শিক্ষকেরাও যাতে পঠনপাঠনকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলতে পারেন, তাই বিএড কলেজেও কর্মশালার আয়োজন করছেন তাঁরা। একেবারেই হাতে-কলমে বিষয়গুলি শেখানো হচ্ছে।
এই দলের অন্যতম সদস্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্র অয়ন দাস জানান, স্কুলস্তরে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বইটুকু পড়ানো হয়। হাতে-কলমে সেটা বোঝানোর সুযোগ কম। সে কারণে তাঁরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে ‘ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বক্স’-এর সাহায্য নিচ্ছেন। তাতে বিষয়টি এতটাই জীবন্ত হয়ে উঠছে যে বুঝতে সুবিধা হচ্ছে কচিকাঁচাদেরও।
কয়েক দিন আগেই বিধাননগর সরকারি স্কুলে এমন কর্মশালা করেছেন অয়নরা। সেখানে নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের হাতে-কলমে বোঝানো হয়েছে নিউটনের গতি সূত্র। ওই স্কুলের গণিতের শিক্ষক সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘পড়ুয়াদের মতো আমারও ব্যাপারটা বেশ ভাল লেগেছে।’’ এমন কর্মশালা নিজের স্কুলে করাতে আগ্রহী যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, শুকনো বইয়ের অক্ষরের বাইরে হাতে-কলমে কিছু শেখালে পড়ুয়ারা অনেক সহজে সেটা বোঝে। কঠিন বিষয় শিখতেও আনন্দ পায়।
এমন কর্মশালা প্রাথমিক ভাবে সামার ক্যাম্পেই সীমাবদ্ধ রাখতে চেয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু দেখা গিয়েছে, অনেক সময় পড়ুয়ারা নানা কারণে বাইরে যেতে পারে না। তাই শুধু সামার ক্যাম্পে আটকে না থেকে স্কুলে স্কুলে কর্মশালার পরিকল্পনা করেন তাঁরা। অয়ন জানান, পাঠ্যসূচির বাইরে অসুস্থ পশুপাখিদের পরিচর্যার বিষয়টিও ভবিষ্যতে অন্তর্ভুক্ত করতে চলেছেন তাঁরা। তাই নিজেদের পশু-পাখি উদ্ধার কেন্দ্র চালু করবেন। অয়ন বলেন, ‘‘শুধু মুখ গুঁজে পড়াশোনা নয়। আশপাশের সব কিছুর সঙ্গে একাত্ম হওয়ারও প্রয়োজন রয়েছে। এই ভাবনাও পড়ুয়াদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য।’’