ফাইল চিত্র
বিয়ের ‘ফাঁদে’ আটকে গিয়েছিল অবসরকালীন পাওনাগণ্ডা। হকের টাকা পেতে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালের (ক্যাট) দ্বারস্থ হয়েছিলেন পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের প্রাক্তন কর্মী নূর হোসেন ঢালি। আদালতে তাঁর বক্তব্য ছিল, তাঁকে অন্যায় ভাবে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে ক্যাট-এর দুই বিচারক মঞ্জুলা দাস এবং নমিতা চট্টোপাধ্যায় চার্জশিট খারিজ করে দিয়েছেন।
নূরের আইনজীবী কল্যাণ সরকার শনিবার জানান, তাঁর মক্কেল বন্ডেল গেটের বাসিন্দা। তিনি শিয়ালদহের চিফ কমার্শিয়াল ক্লার্ক ছিলেন। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর অবসর নেন। ২২ নভেম্বর তিনি সিনিয়র ডিভিশনাল পার্সোনেল অফিসারকে চিঠি দিয়ে জানান, প্রথম স্ত্রীর মানসিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে ২০০৩ সালে দ্বিতীয় বার বিয়ে করতে হয়েছে। দুই স্ত্রীই জীবিত। মুসলিম ধর্মে দ্বিতীয় বিয়ে নিষিদ্ধ নয়। সেই বিয়ে মঞ্জুর করুক রেল কর্তৃপক্ষ। রেল কর্তৃপক্ষ ২৪ নভেম্বর নূরকে জানান, এত দেরিতে দ্বিতীয় বিয়ের কথা জানানোয় তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।
২৭ নভেম্বর নূর অনুরোধ করেন, ওই তদন্ত প্রত্যাহার করে তাঁর অবসরকালীন পাওনাগণ্ডার হিসেব করতে। কিন্তু পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ পাওনা মেটাননি। পেনশনও চালু করেননি। উল্টে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি নূরের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়। বলা হয়, ২০০৩ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করে ১৪ বছর পরে তা জানানোর জন্য চার্জশিট দেওয়া হল।
সেই চার্জশিটকে চ্যালেঞ্জ করে ক্যাট-এ মামলা করেন নূর। মামলার আবেদনে বলা হয়, ২০০০ সালে রেল বোর্ড বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, অবসর নেওয়া কোনও কর্মীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হলে অভিযোগের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে অর্ধেক পেনশন দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে, তা কর্মরত কর্মীর বিরুদ্ধে প্রযোজ্য হতে পারে। অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর বিরুদ্ধে প্রযোজ্য হতে পারে না। রেলের আইনজীবী মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওই চার্জশিট প্রত্যাহারের সুযোগ দেওয়া হোক। বিচারকরা চার্জশিট খারিজ করে পানও না মিটিয়ে দিতেই বলেছেন।