কংগ্রেসের জন্য দরজা খোলা রাখছে সিপিআই

আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট ও ওয়ার্কার্স পার্টিগুলির তিন দিনের আলোচনাচক্র উপলক্ষে কলকাতায় ছিলেন সিপিআইয়ের শীর্ষ নেতৃত্ব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৩২
Share:

ফাইল চিত্র।

এক সময়ে সিপিএমের তোলা স্লোগান ছিল— ‘দিল্লি থেকে এল গাই, সঙ্গে বাছুর সিপিআই’! গত বছর বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার সময়ে বাংলায় মঞ্জুকুমার মজুমদারেরা প্রবল আপত্তি তুলেছিলেন পুরনো সেই দৃষ্টান্ত দেখিয়েই। তাঁদের যুক্তি ছিল, জরুরি অবস্থার সময়ে ইন্দিরা গাঁধীর হাত ধরার মাসুল সিপিআই এখনও দিয়ে চলেছে। তার পরেও আবার সমঝোতা! শেষ পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের দাপটের জেরে এখন সিপিআই-ই দরজা খুলে দিচ্ছে কংগ্রেসের জন্য!

Advertisement

আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট ও ওয়ার্কার্স পার্টিগুলির তিন দিনের আলোচনাচক্র উপলক্ষে কলকাতায় ছিলেন সিপিআইয়ের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই আসর শেষে মঙ্গলবার দলের সাধারণ সম্পাদক সুধাকর রেড্ডি বলেন, ‘‘সাম্প্রদায়িক রাজনীতির আক্রমণের বিরুদ্ধে বাম, ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তির ব্যাপকতম ঐক্য দরকার। জাতীয় স্তরে সেই ঐক্য গড়ে তোলার জন্যই আমরা কাজ করব। আর রাজ্যে রাজ্যে কোন আঞ্চলিক শক্তির সঙ্গে একমঞ্চে থাকব, তা সংশ্লিষ্ট রাজ্য নেতৃত্ব ঠিক করবেন।’’ রেড্ডি জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিক শক্তির বৃহৎ মঞ্চে তাঁরা কংগ্রেসকেও ধরছেন। দলের জাতীয় কার্যসমিতিতে সেই মর্মে সিদ্ধান্তও হয়েছে।

কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে এখন তীব্র বিতর্ক চলছে বড় শরিক সিপিএমের অন্দরে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় যে, আগামী এপ্রিলে হায়দরাবাদ পার্টি কংগ্রেসের জন্য দলের রাজনৈতিক লাইন সংক্রান্ত দু’ধরনের খসড়া প্রস্তাবই জমা হতে পারে! সিপিএমের হায়দরাবাদ কংগ্রেসের কয়েক দিন আগে কেরলের কোল্লমে সিপিআইয়ের পার্টি কংগ্রেস। তার আগেই রেড্ডিদের তরফে কংগ্রেসকে বৃহত্তর ঐক্যে স্বাগত জানানো বাম রাজনীতিতে যেমন তাৎপর্যপূর্ণ, তেমনই এর ফলে চাপ বাড়ল সিপিএমের উপরেও। যা প্রকাশ কারাট, পিনারাই বিজয়নদের কট্টরপন্থী লাইনের বিরুদ্ধে সীতারাম ইয়েচুরি, সূর্যকান্ত মিশ্রদের লড়াইয়ে সহায়ক হতে পারে।

Advertisement

রেড্ডি বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি-র মোকাবিলায় জাতীয় স্তরে তৃণমূলের সঙ্গে সমন্বয় রাখতেও তাঁরা তৈরি। রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সম্প্রতি দু’দল যে একই পক্ষে ভোট দিয়েছে, সেউ উদাহরণ দিয়েছেন তিনি। তবে সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক প্রবোধ পণ্ডা বা উপ-সাধারণ সম্পাদক সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্তেরা বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে কোনও ধরনের সমঝোতাই তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাঁদের বক্তব্য, তৃণমূল তার মতো করে বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়তে পারে। কিন্তু এ রাজ্যে একই রকম ‘অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী’ মনোভাব নিয়ে তৃণমূল বৃহত্তর ঐক্যের শরিক হতে পারে না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন