রামনবমীকে উপলক্ষ করে তরজা বেধেছে বিজেপি এবং তৃণমূলের। বিজেপি-কে কড়া হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু গোটা ঘটনার মধ্যে মৌলবাদের প্রতিযোগিতাই দেখছে বিরোধীরা!
ফি বছর জেলায় জেলায় নিজেদের উদ্যোগে রামনবমীর আচার পালন করে আরএসএস এবং তাদের অনুগামী নানা সংগঠন। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-র সাফল্যের পরে এ বার পশ্চিমবঙ্গ জুড়েও বাড়তি উদ্দীপনা দেখিয়েছে গেরুয়া শিবির। যে ভাবে মহিলা এবং বাচ্চাদের হাতে অস্ত্র ধরিয়ে মিছিল হয়েছে, তাকে বিপজ্জনক আখ্যা দিয়ে সিপিএম দাবি তুলেছে, যে কোনও সম্প্রদায়েরই ধর্মীয় আচারের নামে এ ভাবে অস্ত্র প্রদর্শন বন্ধ হওয়া উচিত। পাশাপাশিই তাদের অভিযোগ, তৃণমূলের রাজনীতির জেরেই রাজ্যের পরিস্থিতি এই জায়গায় গিয়েছে। দলীয় সূত্রে সিপিএম নেতৃত্ব জেনেছেন, জেলায় জেলায় রামনবমীতে যা ভিড় হয়েছে, তা অনেকটাই সংগঠিত। পঞ্চায়েত ভোটের আগে যাকে উদ্বেগজনক মনে করছেন বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব।
মুখ্যমন্ত্রী মুখে যতই হুঁশিয়ারি দিন, সাম্প্রদায়িক ভাবাবেগ মোকাবিলায় তৃণমূলের আন্তরিকতা নিয়ে সন্দিহান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়েরও অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী শুধু বিবৃতি দিয়েই ক্ষান্ত! রাজ্য সরকারের মনোভাবের পরীক্ষা নেওয়ার জন্যই সূর্যবাবু বৃহস্পতিবার আহ্বান জানিয়েছেন, ‘‘পরিস্থিতি যখন আপনারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, তখন সবাইকে ডাকুন। সর্বদল বৈঠক করে এই সঙ্কট মোকাবিলা করার পথ সবাই মিলে ঠিক করুক।’’ তৃণমূলের পাল্টা হিন্দু আচার পালন নিয়ে সূর্যবাবুর কটাক্ষ, ‘‘কেন্দ্র ‘রাম’ সাজছে। আর রাজ্যে তাদের অনুগত ‘হনুমান’ হয়েছে!’’
অধীরবাবুও বলছেন, ‘‘এ রাম পুজো করছে, তো ও দিকে হনুমান পুজো শুরু হয়ে গেল! রাজ্যে প্রতিযোগিতামূলক মৌলবাদ চলছে এখন। বিজেপি আর তৃণমূল নিজেদের মধ্যে রাজ্যটাকে ভাগ করতে চাইছে।’’ তাঁর দাওয়াই, তৃণমূল এবং বিজেপি যত এই পথে যাবে, রাজ্যে ভারসাম্য রাখার কাজ করতে হবে কংগ্রেসের মতো দলকে। একই মত সূর্যবাবুরও। প্রয়োজনে ঝান্ডা ছেড়ে প্রতিবাদের কথা বলেছেন তিনি। কলকাতায় আজ, শুক্রবার বিদ্বজ্জনেদের ডাকে মিছিল রয়েছে সাম্প্রদায়িক ফতোয়া এবং গণতন্ত্রের উপরে আক্রমণের প্রতিবাদে। বাম কর্মীদের সেই মিছিলে সামিল হতে বলেছেন সূর্যবাবু।
আবার দলের পতাকা নিয়েই বর্ধমানে এ দিন সিপিএমের সমাবেশে ভিড় উপচে পড়েছে।