সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য পার্টি চিঠি সিপিএমের

তাত্ত্বিক কোনও ব্যাখ্যা, রাজনৈতিক অবস্থান বা সাংগঠনিক নির্দেশ নয়। এ বার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে দলের কর্মীদের কী করা চলবে এবং কী চলবে না, পার্টি চিঠিতে তার নির্দেশিকা বেঁধে দিল সিপিএম। কমিউনিস্ট পার্টির রেওয়াজে যা অভিনব!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩৩
Share:

তাত্ত্বিক কোনও ব্যাখ্যা, রাজনৈতিক অবস্থান বা সাংগঠনিক নির্দেশ নয়। এ বার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে দলের কর্মীদের কী করা চলবে এবং কী চলবে না, পার্টি চিঠিতে তার নির্দেশিকা বেঁধে দিল সিপিএম। কমিউনিস্ট পার্টির রেওয়াজে যা অভিনব! তবে দলীয় নেতৃত্বের বক্তব্য, এ দেশে ২০১৬ সালে ২১ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছেন। তাই দলের কর্মীদের এমন রূপরেখা জরুরি হয়ে উঠেছে।

Advertisement

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ঘটনার জেরেই বিতর্কে জড়িয়েছিলেন সিপিএমের সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে প্রকাশ্যে সর্তকও করা হয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতেই দলের ২ নং পার্টি চিঠিতে পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে, দলের রাজনৈতিক বা সাংগঠনিক বিষয়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত মতামতকে গুলিয়ে ফেলা চলবে না। যে বিষয়ে দল কোনও অবস্থান নেয়নি, সেই ক্ষেত্রে বা দলের অবস্থানের পরিপন্থী কোনও বক্তব্যকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘লাইক’ দেওয়া বা ‘শেয়ার’ করাও নিজস্ব মতপ্রকাশ বলে ধরা হবে। দলের কর্মীদের এই ব্যাপারে ভিন্নমত থাকলে দলের মধ্যেই জানাতে হবে। কোনও নেতা বা কর্মীকে নিয়ে অম্য কর্মীদের কোনও বক্তব্য থাকলেও উচ্চতর কমিটিকে লিখিত ভাবে জানানো যেতেই পারে।

কলকাতায় রাজ্য কমিটির বৈঠকে ঋতব্রতকে নিয়ে আলোচনার পরেই সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, কর্মীদের সোশ্যাল মিডিয়ায় আচরণবিধি বেঁধে দেওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা। যা কেন্দ্রীয় থেকে একেবারে নিচু তলা পর্যন্ত কার্যকরী হবে। রাজ্যের সাম্প্রতিক পার্টি চিঠিতে সেই বিধানই দেওয়া হয়েছে। শুধু সোশ্যাল মিডিয়া কাজে লাগানোর জন্য দলের নির্দিষ্ট ইউনিটই নয়, শাখা স্তর পর্যন্ত সব সদস্যকে এই রূপরেখা মেনে চলতে বলা হয়েছে পার্টি চিঠিতে।

Advertisement

ঋতব্রতের ঘড়ি বা পেন নিয়ে প্রচার শুরু হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ার একটি গ্রুপে, যেখানে সিপিএমেরই কিছু কর্মী জড়িত। প্রচারকারীদের এক জনের কাজের জায়গায় চিঠি পাঠিয়ে বিতর্কে পড়েছিলেন সাংসদ। এ বার পার্টি চিঠিতে কিন্তু বলে দেওয়া হয়েছে, ‘পার্টি সদস্যদের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ পার্টির লাইন বা নানা সাংগঠনিক বিযয় নিয়ে আলোচনার জন্য পার্টি ইউনিট হতে পারে না। এটা পার্টির নীতি-নিয়মের পরিপন্থী’। কোনও বিষয়ে বা ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন মতপ্রকাশ করলে, পার্টি চিঠি অনুযায়ী তা ‘উপদলীয় কার্যকলাপ’ ছাড়া কিছু নয়। তবে রবিবারও এমন গ্রুপ যথেষ্ট সক্রিয়ই ছিল! দলের মধ্যেই প্রশ্ন, সোশ্যাল মিডিয়া এখন যে বিপুল অবয়ব নিয়েছে, সেখানে কে কী করছে, তার উপরে পুঙ্খানুপুঙ্খ নজরদারি কী ভাবে সম্ভব?

এর মধ্যেই শনিবার সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির বৈঠকে এক প্রস্ত হইচই হয়েছে বেহালার এক প্রাক্তন ছাত্র-নেতার বক্তব্যে। বৈঠকে তাঁর দাবি, সাংসদ ঋতব্রত যুব-ছাত্রদের মধ্যে দলবাজি করছেন। টেট-দুর্নীতির প্রতিবাদে যাঁরা জেলে গিয়েছেন, তাঁরা ওই সাংসদেরই ঘনিষ্ঠ! এমনকী, এসএফআই নেত্রী মধুজা সেনরায় জেলে তাঁর হেনস্থার খবর ইচ্ছাকৃত ভাবেই দলের মুখপত্রের আগে আনন্দবাজারকে দিয়েছেন বলেও তাঁর অভিযোগ! বৈঠকে উপস্থিত দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য ‘অবান্তর’ তত্ত্বে জল ঢেলে দিয়েছেন!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement