CPM

ছাত্র-ভোট থেকে অভিষেক, চ্যালেঞ্জের সুর সিপিএমের

ছাত্র-মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং র‌্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে যাদবপুর ৮বি মোড়ে মঙ্গলবার সমাবেশের ডাক দিয়েছিল সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৫২
Share:

যাদবপুুরে এসএফআই সমাবেশ। —নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, পুজোর পরে রাজ্যে ফের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতে পারে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যাদবপুরে ছাত্র সমাবেশ থেকে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দ্রুত করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল সিপিএম। সমাবেশ থেকে ছাত্র-নেতারা ডাক দিলেন রাস্তার লড়াই ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়ার। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনায় ‘প্রকৃত অপরাধী’দের ধরার পাশাপাশা উঠে এল নিয়োগ ও পাচার-কাণ্ডে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের দাবিও।

Advertisement

ছাত্র-মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং র‌্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে যাদবপুর ৮বি মোড়ে মঙ্গলবার সমাবেশের ডাক দিয়েছিল সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই। পুলিশ অনুমতি না দিলেও ঢাকুরিয়া দক্ষিণাপণ এবং যাদবপুর স্টেশন থেকে দু’টি মিছিল এসে সমাবেশ-স্থলে যোগ দেয়। সমাবেশে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘এক দশকের বেশি সময় ধরে ক্যাম্পাসে গণতন্ত্রের হত্যা হয়েছে। বাম আমলে র‌্যাগিং-বিরোধী আইন তৈরি হয়েছিল। কেন সেই আইন প্রয়োগ করা হল না?” ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী একাধিক বার সিপিএমকে দোষারোপ করেছেন। সেলিমের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘পুলিশ এখনও পর্যন্ত যাঁদের গ্রেফতার করেছে, তাঁরা এক জনও সিপিএম নন, সিপিএম-বিরোধী। মুখ্যমন্ত্রী আর পুলিশ কমিশনার মাথা কুটেও এই ঘটনায় এক জন সিপিএমকেও গ্রেফতার করতে পারবে না!”

সুজন চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।

ওই মঞ্চেই এসএফআই এর রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘যাদবপুরে যত ইচ্ছা সিসি ক্যামেরা লাগানো হোক। ছাত্র-ভোট হওয়ার পরে বিজয় মিছিলের ফুটেজ তুলে তা পাঠানো হবে তৃণমূলের সদর দফতরে!’’

Advertisement

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম, দলের পলিটব্যুরো সদস্য নীলোৎপল বসু এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী— যাদবপুরের তিন প্রাক্তনী ছিলেন সমাবেশে বক্তা। দুর্নীতি এবং ‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ড্স’ সংস্থায় ইডি-র তল্লাশির প্রসঙ্গ তুলে কেন্দ্রীয় সংস্থার উদ্দেশে হুঁশিয়ারির সুরে সেলিম বলেছেন, ‘‘সেপ্টেম্বরের মধ্যে অভিষেককে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে হবে। না হলে আমরা আগামী দিনে ফের ইডি-সিবিআইয়ের অফিস ঘেরাও করব!’’ ক্যাম্পাস ও রাজ্যকে ‘আগাছা মুক্ত’ করার ডাক দিয়েছেন সুজন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই। অথচ কে আচার্য হবে, সেই নিয়ে লড়াই চলছে!’’ বক্তা ছিলেন এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস, রাজ্য সভাপতি প্রতীক-উর রহমানও। সমাবেশে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতোই।

অভিষেক-প্রসঙ্গে সেলিমের হুঁশিয়ারির জবাবে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘বৌবাজার বিস্ফোরণে ৬ নেতা-নেত্রীর দোষ মেনে শাস্তি দিলেও সিপিএমের পুলিশ গ্রেফতার করেনি। আইকোর-এর মালিকের সংবর্ধনা নিতে দেখা গিয়েছে সেলিমকে। তিনি কেন গ্রেফতার হননি তার জবাব দিয়ে তার পরে এ সব অর্থহীন কথা বলা উচিত!’’

যাদবপুর-কাণ্ড নিয়ে এ দিনই সন্ধ্যায় বিজেপির তফসিলি মোর্চার মিছিল ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে। পুলিশ মিছিল আটকালে ধস্তাধস্তি বেধে যায়। বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা রাস্তায় বসে পড়ে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন