হাতের জন্য কোমর বাঁধছে আলিমুদ্দিন

বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পরে ফরমান জারি করেছিল পলিটব্যুরো। দক্ষিণ কাঁথির উপনির্বাচন আবার সেই ফরমান নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে! গোটা দেশ জু়ড়ে বিজেপি-র উত্থান যে ভাবে ঘটছে, তাতে গেরুয়া শিবিরই এখন সিপিএমের কাছে প্রধান প্রতিপক্ষ।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৬
Share:

বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পরে ফরমান জারি করেছিল পলিটব্যুরো। দক্ষিণ কাঁথির উপনির্বাচন আবার সেই ফরমান নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে!

Advertisement

গোটা দেশ জু়ড়ে বিজেপি-র উত্থান যে ভাবে ঘটছে, তাতে গেরুয়া শিবিরই এখন সিপিএমের কাছে প্রধান প্রতিপক্ষ। সেই সঙ্গে বাংলাতেও প্রধান বিরোধী শক্তি হিসাবে দ্রুত উঠে আসছে বিজেপি। বামেদের পিছনে ফেলে দক্ষিণ কাঁথির বিধানসভা উপনির্বাচনে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে তারাই। এই পরিস্থিতিতে এক দিকে তৃণমূল এবং অন্য দিকে বিজেপি-র মোকাবিলা করে নিজেদের জমি ধরে রাখতে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়েই ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে একজোট করার পক্ষে সওয়াল করতে ফের তৈরি হচ্ছে সিপিএমের বঙ্গ ব্রিগেড। দিল্লিতে আজ, সোমবার থেকে শুরু দলের পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। দক্ষিণ কাঁথির ফলাফল এবং রামনবমী-হনুমান জয়ন্তী ঘিরে বাংলায় গেরুয়া বাহিনীর সাম্প্রতিক তৎপরতা তুলে ধরে আশু বিপদ প্রকাশ কারাটদের বোঝানোর জন্য কোমর বেঁধে দিল্লি যাচ্ছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা।

কংগ্রেসের সঙ্গে এখন আর কোনও নির্বাচনী সমঝোতা চলবে না বলে বিধানসভা ভোটের পরে ফরমান জারি করেছিল সিপিএমের পলিটব্যুরো। কারাট শিবিরের সেই মত তখন মেনেই নিতে হয়েছিল সীতারাম ইয়েচুরিদের। দক্ষিণ কাঁথিতে তৃতীয় স্থানে নেমে যাওয়ার পরে আলিমুদ্দিন মনে করছে, ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক সব শক্তিকে নিয়ে একজোট হয়ে লড়াইয়ে না দাঁড়ালে মেরুকরণের রাজনীতিতে আরও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে বামেরা। আগামী মাসেই রাজ্যে ৭টি পুরসভার ভোট। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যা পরিকল্পনা, তাতে পঞ্চায়েত ভোটও হয়ে যাবে ডিসেম্বর-জানুয়ারি নাগাদ। স্থানীয় স্তরের এই সব ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করে লড়াই করতে চায় বঙ্গ সিপিএম। এই নিয়ে পরে আবার যাতে বিতর্ক না বাধে, তার জন্যই দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বিষয়টি বোঝাতে চাইছেন সূর্যবাবুরা।

Advertisement

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘পুরসভা বা পঞ্চায়েত ভোটের রণকৌশলের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন জরুরি নয়। স্থানীয় স্তরে পঞ্চায়েতে নানা রকম সমঝোতা হয়েই থাকে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি অনুযায়ী বৃহত্তর লড়াইয়ের অংশ হিসাবেই যে এই ভোটগুলোকে দেখতে হবে, দলের কেন্দ্রীয় স্তরেও সেই বার্তার প্রয়োজন।’’ বঙ্গ ব্রিগেড-সহ দলের এই অংশ অপেক্ষা করে আছে, আগামী বছর পার্টি কংগ্রেসে বিজেপি-কেই প্রধান বিপদ বলে চিহ্নিত করে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার সূত্রে পাকাপাকি সিলমোহর আদায় করা যাবে।

দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত, কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে ইয়েচুরিকে ফের রাজ্যসভায় পাঠানোর বিষয়টিও এ বার পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে উঠতে পারে। যা সহজে মেনে নিতে রাজি নয় কংগ্রেসের কেরল শিবির! ফলে, বিতর্ক সেই হাত ধরা নিয়েই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন