হরেকৃষ্ণ শতবর্ষেই প্রয়াত বিনয় কোঙার

কৃষক নেতা হরেকৃষ্ণ কোঙারের জন্মশতবর্ষ চলাকালীনই প্রয়াত হলেন তাঁর ভাই, সিপিএমের প্রবীণ নেতা বিনয় কোঙার। কিছু দিন ধরেই অসুস্থ হয়ে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কয়েক দিন আগে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল আইসিইউ-এ। ওই হাসপাতালেই রবিবার বিকালে মারা যান বিনয়বাবু (৮৪)। ঘটনাচক্রে, দাদা হরেকৃষ্ণবাবুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে গত মাসে রাজ্য সিপিএমের অনুষ্ঠানেই শেষ বার জনসমক্ষে বক্তৃতা করেছিলেন বিনয়বাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১৭
Share:

কৃষক নেতা হরেকৃষ্ণ কোঙারের জন্মশতবর্ষ চলাকালীনই প্রয়াত হলেন তাঁর ভাই, সিপিএমের প্রবীণ নেতা বিনয় কোঙার। কিছু দিন ধরেই অসুস্থ হয়ে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কয়েক দিন আগে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল আইসিইউ-এ। ওই হাসপাতালেই রবিবার বিকালে মারা যান বিনয়বাবু (৮৪)। ঘটনাচক্রে, দাদা হরেকৃষ্ণবাবুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে গত মাসে রাজ্য সিপিএমের অনুষ্ঠানেই শেষ বার জনসমক্ষে বক্তৃতা করেছিলেন বিনয়বাবু।

Advertisement

বর্ধমানের মেমারির কোঙার পরিবার কমিউনিস্ট পার্টিতে সুপরিচিত। দাদা হরেকৃষ্ণের মতোই বিনয়বাবুর উত্থানও কৃষক আন্দোলন থেকে। সেই সূত্রেই তিনি সিপিএমের কৃষক সভার রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ছিলেন। মেমারি থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন তিন বার। বয়সজনিত কারণে গত বার রাজ্য সম্মেলনের সময় তিনি সরে দাঁড়িয়েছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী থেকে। দলের কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারম্যান পদও ছেড়ে দিয়েছিলেন সে কারণেই।

মেমারিতে বিনয়বাবুর পরিবারও সিপিএমের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর স্ত্রী এক সময় বিধায়ক হয়েছিলেন, ছেলে-মেয়েরাও আছেন সিপিএমে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রাক্তন সদস্য বিনয়বাবু অবশ্য থাকতেন আলিমুদ্দিনে দলের রাজ্য দফতরেই। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্বে বিনয়বাবুর কিছু বিতর্কিত মন্তব্য তাঁকে সংবাদ শিরোনামে এনে দিলেও আদ্যন্ত কমিউনিস্ট হিসেবে এখনকার জমানাতেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। এ ভাবেই তাঁকে মনে রাখবে বাম রাজনীতি। সিপিএমের সঙ্গে নানা বিরোধ থাকলেও বিনয়বাবুর মৃত্যুতে বাম ও কৃষক আন্দোলনের ক্ষতি হল বলে জানান সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন নেতা কার্তিক পালও।

Advertisement

কংগ্রেস জমানায় সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডে নিরুপম সেনদের সঙ্গেই নাম জড়িয়েছিল বিনয়বাবুর। কোর্টে অব্যাহতি পেলেও বিরোধীরা তাঁকে ওই অস্ত্রে বারবারই নিশানা করত। এর পরে বিনয়বাবু বড় বিতর্কে জড়ান সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে আন্দোলনের সময়। সমাজকর্মী মেধা পাটকর নন্দীগ্রামে যাচ্ছেন শুনে বিনয়বাবুর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, সত্যিই তেমন হলে দলের মহিলা কমরেডরা মেধাকে পশ্চাদদেশ দেখাবেন! সেই সঙ্গেই তাঁর হুমকি ছিল, নন্দীগ্রামে বেশি প্রতিবাদ হলে চার দিক থেকে ঘিরে ধরে সেখানে ‘লাইফ হেল’ করে দেওয়া হবে! প্রভূত বিতর্ক বাধে তাঁর মন্তব্যে। জমি আন্দোলনে বেকায়দায় থাকা সিপিএম ওই ধরনের মন্তব্যের জেরে আরও কোণঠাসাও হয়ে পড়ে।

আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের একফালি ঘরে নিতান্ত সাধারণ ভাবে থেকে গেলেও শরীরের কারণে ইদানীং রাজনীতি থেকে নিজেকে অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছিলেন বিনয়বাবু। হরেকৃষ্ণ শতবর্ষের অনুষ্ঠানের পরে পড়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পিস হেভনে রাখার পরে আজ, সোমবার আলিমুদ্দিন ঘুরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে দেহদান করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন