বিমান বসু। —ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত বোর্ড দখল নিয়ে একমাত্র আমডাঙাতেই বিরোধী-প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়েছে শাসকদলকে। তাই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ‘আমডাঙা-মডেল’কেই সামনে রেখে এগোতে চাইছে বামেরা।
রবিবার আমডাঙার মাধবপুরে সভা করতে এসে সে কথাই জানালেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। দলীয় নেতাকর্মীদের তিনি আক্রান্তদের সঙ্গে থাকা, ধৃতদের মামলা-মোকদ্দমার বিষয় দেখা ও মহিলা-শিশুদের খাবার পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
বিমানবাবু বলেন, ‘‘আমডাঙা রুখে দাঁড়িয়ে ইতিহাস তৈরি করেছে। প্রতিবাদ করতে করতে প্রতিরোধ করে দেখিয়েছে। এ ছাড়া উপায় নেই। আমডাঙাই হোক আমাদের পথ।’’
আমডাঙায় তিনটি পঞ্চায়েতে তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। সেখানে বোর্ড গড়া নিয়ে তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষে মৃত্যু হয় দু’দলের চার জনের। জেলাশাসকের নির্দেশে ওই ৩ পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন স্থগিত। ওই প্রসঙ্গে বিমানবাবু বলেন, ‘‘আমডাঙায় ৪২ জনকে মিথ্যা মামলায় অস্ত্র হাতে ধরিয়ে দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে, আরও হবে। ৩টি পঞ্চায়েত দখলের জন্য এত রক্ত! কেবল মহিলা ও শিশুরা বাড়িতে, সমস্ত পুরুষ ঘরছাড়া। খাবার জোগাড় করতে অসুবিধা হচ্ছে।’’ তৃণমূলের এমন আক্রমণের জন্যই রাজ্যে সিপিএমের অসুবিধা। ফলে বিজেপি-আরএসএসের বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
বইচগাছিতে এ দিন বামেরা যাতে ঢুকতে না পারে, সে জন্য মোড়ে মোড়ে ছিল পুলিশ ও র্যাফ। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘মিথ্যা মামলায় জাকির বুল্লুককে ফাঁসিয়েছে তৃণমূল। একে-৪৭ কোথায় আছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক খুঁজে বের করুন।’’
বিমানবাবুও সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘তৃণমূল সব পঞ্চায়েতের দখল নেবে। জাকিরের মতো যাঁরাই বিরোধিতা করবেন, তাঁদেরই মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করবে। খাদ্যমন্ত্রী যে কাজ করছেন তা মারাত্মক ব্যাপার। স্বৈরাচারের নিয়ম এটাই।’’
খাদ্যমন্ত্রীর পাল্টা দাবি, গত ৬ মাস জাকিরের মোবাইলে আলিমুদ্দিনের যে যে ভয়ঙ্কর বার্তালাপ হয়েছে তা জনসমক্ষে তুলে ধরা হোক। জাকির বাংলাদেশে অস্ত্রের ব্যবসা করছেন— এই অভিযোগ তুলে কোন নেতাদের মদতে হচ্ছে, সেই প্রশ্নও রেখেছেন তিনি। ফোনে বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলের হার্মাদদের জেলায় থাকতে দেব না। হার্মাদবিহীন জেলা হবে উত্তর ২৪ পরগনা। ’’