মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
ওড়িশায় ভয়ঙ্কর তাণ্ডব চালাচ্ছে ফণী। ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ এখন পশ্চিমবঙ্গের দিকে। ইতিমধ্যেই আলিপুর আবহাওয়া দফতর চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে। তার পর থেকে আরও সজাগ পুলিশ-প্রশাসন। নির্বাচনের সময়ে রাজনৈতিক সভা বাতিল করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই খড়্গপুরের কন্ট্রোল রুম থেকে নজরদারি চালাচ্ছেন। সেখান থেকে তিনি বিভিন্ন জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশও দিচ্ছেন।
আগামী ৪৮ ঘণ্টা খুব প্রয়োজন না পড়লে রাজ্যের মানুষকে ঘর থেকে না বেরনোর অনুরোধ জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, “দুর্যোগ এবং দুর্ভোগের ভয় না পেয়ে সাবধানে থাকতে হবে। এই দুটো দিন বাইরে না বেরনোই ভাল। উদ্বেগ নয়, ভয় নয়, প্রশাসন আপনাদের সঙ্গেই রয়েছে।”
চন্দ্রকোনা, কেশিয়াড়ি, ঘাটালে রাজনৈতিক সভা ছিল মমতার। কিন্তু তিনি এই দুর্যোগের কারণে তা বাতিল করেছেন। রয়ে গিয়েছেন খড়্গপুরেই। তিনি বলেন, “আমি এখান থেকেই নজর রাখছি। কারণে সামনে দিঘা। ওড়িশা থেকে খুব কাছে। এখান থেকে ঝাড়গ্রাম-সহ বিভিন্ন জেলা কাছাকাছি। কলকাতায় ফিরহাদ হাকিমকে তৈরি থাকতে বলেছি। মুখ্য সচিব মলয় দে-এর নেতৃত্বে একটি দলও গঠন করে দিয়েছি। ওরা সব দিকেই নজর রাখছে।”
আরও পড়ুন: লাইভ: গাছ উপড়ে, ঘর ভেঙে, গ্রাম ভাসিয়ে ফণী-তাণ্ডব ওড়িশায়, মৃত অন্তত ২
উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি যেখানে রয়েছে, সেখানে আকাশটা গভীর অন্ধকারে ছেয়ে গিয়েছে। কিন্তু চিন্তা বা উদ্বেগের করার কোনও দরকার নেই। আমার তৈরি রয়েছি। ঝড় লন্ডভন্ড করে দেবে জানি। গাছও পড়বে। আমার অনুরোধ, যাঁরা পুরনো বাড়িতে আছেন, তাঁরা অন্যত্র চলে যান। আমারা জেলায় জেলায় ত্রাণের ব্যবস্থা করেছি। অনেকেই বাড়ির মায়া ছেড়ে যেতে চান না। দয়া করে ত্রান শিবিরে চলে যান।”
আরও পড়ুন: রাজ্যে ঝড়বৃষ্টি শুরু, বিকেল থেকে বাড়বে ঝড়ের তাণ্ডব, ভোররাতেই আছড়ে পড়বে ফণী
নবান্ন সূত্রে খবর, যে সেতুগুলি সংস্কারের কাজ চলেছে, সেখানে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক। দিঘা থেকে এখন ফণী ২২৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। কলকাতা থেকে দূরত্ব ৩৭০ কিলোমিটার। এরই মধ্যে ফণীর প্রভাবে এ রাজ্যের উপকূলে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে। শুক্রবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তৈরি রয়েছে জেলায় জেলায়। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে প্রশাসনও।