হাবরায় ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে উপড়ে গিয়েছে গাছ।
হাবরকয়েক সেকেন্ডের ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ হয়ে গেল গোটা এলাকা। কোথাও উপড়ে গিয়েছে গাছ, তো কোথাও উড়ে গিয়েছে বাড়ির চালা। উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা-অশোকনগরের বিস্তীর্ণ এলাকা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বুধবার সকালের ওই ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে পড়ে কয়েকশো বাড়ি। তবে প্রাণহানির কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
নিম্নচাপের জেরে সকাল থেকেই দক্ষিণবঙ্গের বিস্তির্ণ এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছিল। তারই মধ্যে সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ প্রবল ঝড় ওঠে ওই এলাকায়। কোথাও ৩০-৪০ সেকেন্ড কোথাও বা মিনিটখানেক। আর তাতেই সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। হাবরার কামারথুবা, শ্রীনগর, শ্রীপুর, আয়রা-র পাশাপাশি অশোকনগরের বনবনিয়া, কাজলা, গাঙ্গুলি মোড়-সহ বেশ কিছু জায়গা ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যেই চারদিকের গাছপালা উপড়ে পড়তে থাকে। উড়ে যায় টিনের চাল। ভেঙে পড়ে টালি-টিনের চালাওয়ালা প্রচুর বাড়ি। এমনকী, পাকা বাড়িতেও ফাটল দেখা দেয়। ভেঙে পড়ে প্রচুর বাড়ির পাঁচিল। চিলেকোঠার ছাউনিও কয়েক শো মিটার দীরে উড়ে পড়েছে।
দেগঙ্গায় ভেঙে পড়েছে ঘর।
দহরথুবা তিন রাস্তা মোড়ের কাছে অশোক সরকারের বাড়ি। তিনি বললেন, ‘‘হঠাত্ই কেমন সোঁ সোঁ শব্দে হাওয়া বইতে শুরু করল। তার পরেই দেখলাম উঠোনের জাম গাছটা উপড়ে গিয়ে পড়ল পাঁচিলের উপর।’’ ঝড় থামলে দেখা যায়, ওই তিন রাস্তার মোড়ের সমস্ত দোকানের টিনের চালা উড়ে গিয়ে পড়েছে প্রায় ১০০ মিটার দূরে। সেখানে মুরগির দোকান স্থানীয় বাসিন্দা পিন্টু কর্মকারের। তিনি তখন দোকানের ভিতরে বসে ছিলেন। ঝড়ে তার দোকানের চালা উড়ে যায়। পিন্টু বলেন, ‘‘প্রবল বৃষ্টির পাশাপাশি হঠাত্ই শুরু হয় ঝড়। দোকানের চালাটা উড়ে যাওয়ায় খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। মাথা নিচু করে কোনও রকমে নিজেকে বাঁচাই।’’
বাড়ির তলায় চাপা পড়েছিল কবিতা ও তাঁর ছেলে শুভ সরকার। পরে তাদের উদ্ধার করে হাবরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গাছ পড়ে সমস্ত রাস্তাঘাট আটকে গিয়েছে। কোথাও ভেঙেছে ডালপালা, তো কোথাও উপড়ে গিয়েছে গোটা গাছ। চতুর্দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে টিনের চালা বা টালি ভাঙা। ফের ঝড় আসতে পারে এই আতঙ্কে প্রহর গুনছেন সকলেই। পরিস্থিতি দেখতে সেখানে যাবেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
দেগঙ্গাতেও এ দিন সকালে প্রবল ঝড়বৃষ্টি হয়। সেখানেও প্রচুর ঘর-বাড়ি ভেঙে পড়ে। উপড়ে যায় গাছপালা। ঝড়ে আতঙ্কিত হয়ে দু’একজন অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এই সংক্রান্ত আরও খবর...
ঘুর্ণিঝড় আসল তেড়ে
ছবি: শান্তনু হালদার, সজল চট্টোপাধ্যায়।