হাল্কা বৃষ্টি রাজ্যে, ডাঙায় ওঠা হল না আর, প্রাণ হারাল কুমির

শুকনো হাওয়া গিলে ফেলে বেকায়দায় পড়েছিল কুমির। শেষ পর্যন্ত সেটাই কাল হল তার। শুক্রবার ডাঙা থেকে বেশ অনেকটাই দূরে ‘প্রাণ’ খোয়াল কুমির! মৌসম ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরেই সাদামাটা নিম্নচাপের চেহারা নিয়েছে ঘূর্ণিঝ়ড় কিয়ান্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:২৯
Share:

শুকনো হাওয়া গিলে ফেলে বেকায়দায় পড়েছিল কুমির। শেষ পর্যন্ত সেটাই কাল হল তার। শুক্রবার ডাঙা থেকে বেশ অনেকটাই দূরে ‘প্রাণ’ খোয়াল কুমির! মৌসম ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরেই সাদামাটা নিম্নচাপের চেহারা নিয়েছে ঘূর্ণিঝ়ড় কিয়ান্ত। রাত পর্যন্ত অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলীয় এলাকা থেকে নিম্নচাপের অবস্থান অনেকটাই দূরে।

Advertisement

কিয়ান্ত নামটি দিয়েছিল মায়ানমার। সে দেশের মোন উপজাতির ভাষায় এর অর্থ কুমির। মায়ানমার থেকে গোড়ায় এ রাজ্যের দিকে মুখ ঘুরিয়েছিল ঘূর্ণিঝড়টি। কিন্তু ফিরতি বর্ষা বা উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর ধাক্কা তাকে দক্ষিণ ভারতের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। পরে মধ্য ভারতের শুকনো উত্তুরে হাওয়া ঘূর্ণিঝ়ড়ের মধ্যে ঢুকে পড়ে তাকে দুর্বল করে দিয়েছিল। আবহবিজ্ঞানীদের অনেকে জানান, সাগর থেকে জলীয় বাষ্প শুষে শক্তি বাড়ে ঘূর্ণিঝড়ের। এ ক্ষেত্রে উত্তুরে হাওয়াই ক্রমাগত কুমিরের শরীর থেকেই জলীয় বাষ্প শুষে তাকে নিস্তেজ করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শেষমেশ আর টিঁকে থাকতে পারেনি সে।

সাগরে প্রাণ হারালেও কুমিরের লেজের ঝাপ্টা খেল দেখাচ্ছে কলকাতায়! এ দিন কলকাতার আকাশ মেঘলা ছিল। দক্ষিণ কলকাতার দিকে এক পশলা জোরালো বৃষ্টিও মিলেছে। আবহবিদেরা বলছেন, দক্ষিণ ভারতের দিকে যাওয়ার পথে ঘূর্ণিঝড় কিয়ান্তের লেজের ঝাপ্টায় বঙ্গোপসাগর থেকে জোলো হাওয়া ঢুকে পড়েছিল গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। ফলে দক্ষিণবঙ্গের বাতাসে জলীয় বাষ্প বেড়েছে ও তা ঘনীভূত হয়েই মেঘ তৈরি করছে। এ দিনের বৃষ্টির পিছনেও ওই মেঘই দায়ী।

Advertisement

রেডার চিত্র বিশ্লেষণ করে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, এ দিন কলকাতার আকাশে একটি মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল। সেটিই দক্ষিণ কলকাতায় বৃষ্টি ঘটিয়েছে। আবহবিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, অল্প জায়গার উপরে মেঘপুঞ্জটি ভেঙে পড়ায় জোরালো বৃষ্টি মিলেছে।

আজ, শনিবার কালীপুজো। আলোর রোশনাইয়ে সাজবে বাংলা। আমজনতার প্রশ্ন, আলোর রোশনাইয়েও কি কুমিরের লেজের ঝাপ্টার প্রভাব পড়বে?

আবহবিদদের অনেকেই তেমন আশঙ্কা করছেন না। তাঁদের মতে, যে পরিমাণ জোলো হাওয়া ঢুকেছে তাতে প্রবল বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা নেই। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে যে নিম্নচাপ অক্ষরেখা ছিল, তা-ও দুর্বল হয়ে গিয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তাও বলছেন, ‘‘কালীপুজোয় বড়জোর বিক্ষিপ্ত ভাবে হাল্কা বৃষ্টি হতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন