নজরগঞ্জ সমাজবাড়ি সর্বজনীনের পুজোর মণ্ডপ।—নিজস্ব চিত্র।
আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। তারপর বিড়বিড় করে বললেন, ‘‘তিতলি এসে যা শুরু করেছে, জানি না ব্যাঙ ডাকতে পারবে কি না।’’
বৃহস্পতিবার সকালে মেদিনীপুর শহরের নজরগঞ্জ সমাজবাড়ি সর্বজনীনের পুজোর মণ্ডপে দাঁড়িয়ে এমনই আক্ষেপ করছিলেন সেখানকার এক উদ্যোক্তা। আক্ষেপের কারণ, তিতলির প্রভাবে তৈরি আবহাওয়া। এ বার ওই পুজো কমিটির থিম ব্যাঙ। পুজো কমিটির সম্পাদক শ্রীকান্ত মিত্র মজুমদার বলেন, ‘‘হারিয়ে যাচ্ছে ব্যাঙের নিরাপদ আবাস। বিলুপ্ত হচ্ছে ব্যাঙের নানা প্রজাতি। স্থলজ ও জলজ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এবং খাদ্য শৃঙ্খলে ব্যাঙের গুরুত্ব যে অপরিসীম তা বোঝানোও এই থিমের উদ্দেশ্য।” যান্ত্রিক কণ্ঠে ডাকবে ব্যাঙ। এ ছাড়াও থাকবে নানা প্রজাতির পাখি, মাছ। কিন্তু পরিস্থিতি যা তাতে কী ভাবে কাজ শেষ হবে তা নিয়ে চিন্তায় উদ্যোক্তারা। এ দিন প্যান্ডেলের সামনে গিয়ে দেখা গেল, জল জমেছে। সামনের দিকে অনেকগুলো ব্যাঙের ছাতার আদলে কাঠামো তৈরি হয়েছে। সেখানেও জল জমেছে। জলকাদা মিলেমিশে একাকার!
খড়্গপুর শহরের বিগ বাজেটের পুজোর কর্মকর্তাদের কাছে এখন ‘ভিলেন’ হয়ে গিয়েছে তিতলি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টি হয়নি শহরে। তবে বুধবারের টানা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে অনেকটা সময়। কাজ এগোয়নি এতটুকু। উল্টে নির্মীয়মাণ পুজো মণ্ডপে বৃষ্টির জলে ক্ষতি হয়েছে রং, প্যারিস, তুলো, আলো-সহ নানা সরঞ্জামের। বাড়তি খরচ করে শিল্পীদের দিয়ে নতুন করে পুজো মণ্ডপ সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন পুজোর উদ্যোক্তারা।”
আরও পড়ুন: নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে তিতলি, আগামী দু’দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা রাজ্যে
আরও পড়ুন: গ্রামে ঠাকুর দেখে মেয়ের ফিরতে সন্ধ্যা হলেই মা অস্থির হন এখন
অরণ্যশহরের উদ্বেগ বাড়িয়েছে বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার কখনও ঝেঁপে, কখনও ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েছে। নাগাড়ে বৃষ্টি হলে আর রক্ষে নেই। গত অগস্টে ভারী বর্ষণে ঝাড়গ্রাম শহর বানভাসি হয়েছিল। তাই কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, “পুজোর মরশুম নিয়মিত শহর পরিষ্কার রাখতে বলা হয়েছে।” পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেবের আশ্বাস, “নিকাশি নালা গুলি পরিষ্কার করা হচ্ছে। শহরে নিয়মিত জঞ্জাল পরিষ্কার করা হচ্ছে। চিন্তার কিছু নেই।”