—ফাইল চিত্র।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত কি সাপের বিষ পাচারের অন্যতম করিডর হয়ে উঠেছে? গত এক বছরের ঘটনা প্রবাহ দেখে অন্তত তেমনটাই মত বিএসএফ, বন দফতর ও পুলিশ কর্তাদের।
রবিবার রাতে মালদহের গাজলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে টোল প্লাজার কাছ থেকে সাপের বিষ উদ্ধার হয়। বিএসএফ, পুলিশ ও বন দফতরের কর্তাদের অনুমান ওই বিষ সম্ভবত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশেই পাচার হত। কারণ ওই টোল প্লাজার একটু পরেই শুরু হচ্ছে হিলি সীমান্তে যাওয়ার ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক। হিলিতে প্রায় ২৯ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় ওই পথে পাচারের সুবিধা হয় বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, মালদহের দৌলতপুরের পর গাজল, এ নিয়ে জেলায় গত এক বছরে দু’বার সাপের বিষ উদ্ধার হল। দক্ষিণ দিনাজপুরে গত এক বছরে সংখ্যাটা তিন এবং প্রতি বারই তা হিলি যাওয়ার রাস্তায় হয় বলে খবর।
ঘটনায় এক পাচারকারীকে গ্রেফতার করে বিএসএফ। রাতেই তাকে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। তারা জানায়, পুুখুরিয়ার বাসিন্দা ধৃত মহম্মদ ইসমাইলকে সোমবার মালদহের সিজেএমের এজলাসে তোলা হয়। সরকারি আইনজীবী দেবজ্যোতি পাল বলেন, ‘‘ধৃতের কাছে ফ্রান্সে তৈরি একটি জারে পাউডারের আকারে ১ কেজি ৫৯২ গ্রাম সাপের বিষ পাওয়া যায়। তাকে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।’’
সূত্রের খবর, বিএসএফের গোয়েন্দা শাখা খবর পায় যে মালদহ থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর দিয়ে সাপের বিষ বাংলাদেশে পাচার করা হবে। সেই মতো মালদহের গাজলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের টোল প্লাজার কাছে রবিবার দুপুর থেকে ফাঁদ পাতেন বিএসএফের গোয়েন্দা শাখার কর্মীরা। রাত আটটা নাগাদ একটি গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি বুলেটপ্রুফ জারে সাপের বিষ উদ্ধার হয়।
সূত্রের খবর, এই সাপের বিষের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। এই সাপের বিষ মূলত বাংলাদেশ মারফত চীনে পাচার হয়। এর থেকে মারণ রোগের ওষুধ এবং বহু মূল্যবান মাদক তৈরি হয় বলে খবর। বিদেশের বাজারে এর চাহিদা ব্যাপক।
পুলিশ জানায়, ধৃত ব্যক্তি কী ভাবে ওই বিষ সংগ্রহ করল পেল, তা জানতে তদন্ত করা হচ্ছে। উদ্ধার হওয়া সাপের বিষ এর মধ্যেই বনদফতরের হাতে তুলে দিয়েছে বিএসএফ।
বনদফতরের এক আধিকারিক সত্যসুন্দর দেবনাথ বলেন, ‘‘পাউডারের আকারে এটা কী ধরনের সাপের বিষ তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুনেতে ন্যাশনাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে নমুনা পাঠানো হবে।’’