ধন্দ রেখেই খুলল স্কুল

৫১ দিন পর খুলল দাড়িভিট স্কুল, ঘর সাফাই-ই এখন পরীক্ষা

ভিতরে ঢুকে চারপাশের ছবি দেখে সকলে থ। ভিতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কাগজপত্র। অফিস ঘরের ভিতরে চেয়ার টেবিল উল্টে ফেলে রাখা হয়েছে। ছিঁড়ে কুটিকুটি বেশ কিছু নথি। সে সব ঠিক করতেই অনেকটা সময় গেল সকলের। ফলে প্রথম দিন পড়াশোনা বিশেষ হল না।

Advertisement

অভিজিৎ পাল

দাড়িভিট শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৪
Share:

লন্ডভন্ড: এমনই অবস্থা দাড়িভিট স্কুলের অফিস ঘরের। নিজস্ব চিত্র

প্রথম দরজায় এখনও তালা। শনিবার দুপুরে দ্বিতীয় দরজা খুলে স্কুল চত্বরে ঢুকলেন মহকুমাশাসক মণীশ মিশ্র। পিছনে স্কুলের শিক্ষক, পড়ুয়াদের অনেকে। ৫১ দিন পরে এই প্রথম স্কুলের ভিতরে কারও পা পড়ল।

Advertisement

ভিতরে ঢুকে চারপাশের ছবি দেখে সকলে থ। ভিতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কাগজপত্র। অফিস ঘরের ভিতরে চেয়ার টেবিল উল্টে ফেলে রাখা হয়েছে। ছিঁড়ে কুটিকুটি বেশ কিছু নথি। সে সব ঠিক করতেই অনেকটা সময় গেল সকলের। ফলে প্রথম দিন পড়াশোনা বিশেষ হল না।

স্কুল খোলার খবরে অবশ্য হাঁফ ছেড়েছেন অভিভাবকেরা। বিশেষ করে যাদের সামনে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা, তারাও কিছুটা স্বস্তিতে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই টেস্ট পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। তার আগে স্কুল আগের চেহারায় ফিরবে কিনা, তা নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে সকলের মধ্যে।

Advertisement

আরও পড়ুন: এর পরেও পর্যাপ্ত শিক্ষক মিলবে তো! দুশ্চিন্তায় পড়ুয়ারা

সোমবার থেকে হবে কি না যেন এখনও সেই ভরসা করে উঠতে পারছেন অনেকেই। জেলার ভারপ্রাপ্ত স্কুল পরিদর্শক সুজিতকুমার মাইতির আশ্বাস, ‘‘এ দিন স্কুল খোলা সম্ভব হয়েছে। স্কুলের চারিদিকেই অপরিষ্কার, লন্ডভন্ড অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সমস্ত কিছুই পরিষ্কার করতে হচ্ছে। আশা করছি, সোমবার থেকেই স্কুল শুরু করা সম্ভব হবে।’’

আরও পড়ুন: তিন শর্তে দাড়িভিটের স্কুল খুলে দিলেন গ্রামবাসীরা

এ দিন থেকেই স্কুল সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। হাত লাগিয়েছেন স্কুলের শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মচারীরা সকলেই। রবিবারও স্কুলে সাফাই হবে। বাস্তুকাররাও স্কুলে সমস্ত কিছুই খতিয়ে দেখেন। কী প্রয়োজন রয়েছে তার একটি তালিকাও দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁদের। প্রধান শিক্ষক অনিল মণ্ডল বলেন, ‘‘স্কুলের যা পরিস্থিতি ছিল, তাতে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে ঢুকে বার হয়ে যায়। সোমবার থেকেই ক্লাস শুরু করতে পারব আশা করছি।’’ মহকুমাশাসক মণীশ মিশ্রের কথায়, ‘‘স্কুল খোলা সম্ভব হয়েছে। দ্রুত পড়াশোনাও শুরু হবে।’’

ছড়ানো ছিটানো পরিস্থিতির মধ্যে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিক ও পড়ুয়াদের বাদে কেউকেই ঢুকতে দিতে চায়নি প্রশাসনের কর্তারা। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই উপরের দিকে ঘরগুলোয় গেলেও ওই পরিস্থিতি দেখে ফিরে যান। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা জানান, এ দিন মিডডে মিলের ব্যবস্থা প্রায় ঠিকঠাক। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা না থাকায় ক্লাস কিংবা মিডডে মিল কিছুই হয়নি। দশম শ্রেণির ছাত্রী মীনু কীর্তনীয়া, সুপ্রীতি মজুমদার, রূপালি সিংহ-সহ অনেকেই স্কুল পোশাকে পিঠে ব্যাগ নিয়েই স্কুলে এসেছিলেন। ছাত্রীদের কেউ কেউ বলেন, ‘‘স্কুল খুলবে বলেই এসেছি। তবে এ দিন পরিস্থিতি ক্লাস করার মতো নয়।’’ একই সঙ্গে বলেন, ‘‘গণ্ডগোলের আগে শুনেছিলাম টেস্ট পরীক্ষা হবে ১৫ নভেম্বর। সে দিন কি টেস্ট পরীক্ষা আদৌ দিতে পারব, এখনও বুঝতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন