মানেভঞ্জন থেকে সান্দাকফু যাওয়ার রাস্তা। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।
পশ্চিমি ঝঞ্ঝা সক্রিয় ছিলই। তার উপর ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’র প্রভাব। যার জেরে উত্তরবঙ্গে ভারী ঝড়বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ দার্জিলিঙের সান্দাকফু। প্রশাসন জানিয়েছে, মানেভঞ্জন থেকে সান্দাকফু পর্যন্ত যাত্রা আপাতত বন্ধ রাখা হচ্ছে। করা যাবে না ট্রেকিংও। নতুন নির্দেশিকা জারি না হওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশই বহাল থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় মোন্থার অবশিষ্টাংশ নিম্নচাপ হিসাবে দক্ষিণ ছত্তীসগঢ় থেকে আরও উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে সরেছে এবং সুস্পষ্ট নিম্নচাপ অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থান দক্ষিণ ছত্তীসগঢ় সংলগ্ন পূর্ব বিদর্ভের উপর। এর সঙ্গে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭.৬ কিলোমিটার উঁচুতে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তা আরও উত্তর দিকে সরবে এবং শক্তি হারিয়ে সাধারণ নিম্নচাপ অঞ্চলে পরিণত হবে।
সুস্পষ্ট নিম্নচাপ অঞ্চলের প্রভাবে আরও দু’দিন ভারী বৃষ্টি চলবে উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গে। উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় শুক্রবার লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে শনিবার পর্যন্ত। তার পর ধীরে ধীরে আবহাওয়া শুকনো হতে পারে।
শুক্রবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির (৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার) সম্ভাবনা রয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারে। এই জেলাগুলিতে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জলপাইগুড়ির কিছু কিছু এলাকায় অতি প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাসও রয়েছে। এ ছাড়া, কোচবিহার এবং উত্তর দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এই দুই জেলার জন্য রয়েছে কমলা সতর্কতা। দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে শুক্রবার। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার থেকে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির দাপট কিছুটা কমবে। ওই দিন ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কেবল আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারের কয়েকটি এলাকায়। তবে উত্তরবঙ্গ জুড়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি চলতে পারে রবিবার পর্যন্ত। সোমবার থেকে আবহাওয়া শুকনো থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সিকিমের আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘আগামিকাল লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে চার জেলায়। প্রায় ২০০ মিলিমিটারের অধিক বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রবিবার থেকে পরিবেশ স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।’’
ভারী বৃষ্টির জেরে উত্তরবঙ্গের নদীগুলিতে ফের বাড়তে পারে জলস্তর। ফলে নদী সংলগ্ন এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। দার্জিলিং ও কালিম্পঙের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের সম্ভাবনাও রয়েছে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ ইতিমধ্যেই জারি করা হয়েছে হেল্প লাইন নম্বর।
এ ছাড়া মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে সিকিমে। তুষারপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া তুষারপাত হতে পারে দার্জিলিঙের উঁচু এলাকায়। মালদহ, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুরেও শুক্রবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।