পাহাড় নিয়ে দায় এড়াল বিজেপি

জঙ্গি-যোগ প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তো ফি মাসে পাহাড়ে যান। এত দিন পরে এখন হঠাৎ জঙ্গি-যোগের কথা বুঝলেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘উনি কেন্দ্রের পয়সা নেবেন। বাহিনী নেবেন। অথচ সহযোগিতা নেবেন না।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৭ ০২:৫৬
Share:

গরুবাথানে মোর্চা সমর্থকদের মিছিল। ছবি:দীপঙ্কর ঘটক

পাহাড়ে অশান্তির পিছনে বিজেপির ইন্ধনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা তোপ দাগলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। রবিবার বীরভূমের দুবরাজপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘বিজেপি নিজের কাজ নিয়ে আছে। দিদিই তো গোর্খাদের এমন ধ্বংসাত্মক আন্দোলন করতে বাধ্য করছেন। সবই মুখ্যমন্ত্রীর অহঙ্কার এবং সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য।’’

Advertisement

জঙ্গি-যোগ প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তো ফি মাসে পাহাড়ে যান। এত দিন পরে এখন হঠাৎ জঙ্গি-যোগের কথা বুঝলেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘উনি কেন্দ্রের পয়সা নেবেন। বাহিনী নেবেন। অথচ সহযোগিতা নেবেন না।’’ দিলীপবাবুর দাবি, আসলে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই চান অশান্ত থাকুক পাহাড়। কারণ, তৃণমূল ওখানে জিততে পারছে না। বিজেপির রাজ্য সভাপতির মতে, নেপালি ও বাঙালি ভোট আলাদা করে বিরোধী ভোটকে নিজের দিকে আনার চেষ্টা করছেন মমতা। সেটা করতে গিয়েই গোর্খাদের কোণঠাসা করে ফেলেছে তৃণমূল।

দীলিপবাবুর কথায়, ‘‘আমরা টিভিতে দেখছি পাহাড়ে পুলিশ গুলি চালাচ্ছে। অথচ উনি বলছেন পুলিশ গুলি চালায়নি। গুলি কি তবে ভগবান চালিয়েছে?’’ তাঁর আরও অভিযোগ, জিটিএ-কে এড়িয়ে জেলাশাসকের মাধ্যমে আলাদা প্রশাসন চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু ঘুষ দিয়ে রাজনৈতিক জমি তৈরি করতে চাইছেন। পাহাড়ে অশান্তির কারণ এটাই।

Advertisement

আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘‘আগে এই সরকার বলত, দার্জিলিং হাসছে। আমরা হাসতে দেখছি না, কাঁদতে দেখছি। এর পিছনে জঙ্গি বা দাঙ্গা খুঁজে নিজেদের দায় এড়িয়ে গিয়ে লাভ নেই।’’ পাহাড় নিয়ে আলোচনার পক্ষে সওয়াল করেছেন দুই বিজেপি নেতাই। তাঁদের মতে, পাহাড়ে গিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলতে হবে। দীলিপবাবুর কটাক্ষ, ‘‘সেটাই অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী চান না।’’

অন্য বিরোধী দলগুলিরও দাবি, পাহাড় নিয়ে রাজ্য সরকারের নীতিই এই সঙ্কটের কারণ। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘পাহাড়কে যাঁরা সুইৎজারল্যান্ড বানাবেন বলেছিলেন, আজকে কি তাঁরা কাশ্মীর বানাচ্ছেন?’’ সুজনবাবুর মতে, শান্ত পাহাড়কে ফুটন্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দায় তাঁরই। সুজনবাবুর কথায়, ‘‘পাহাড়ে এক সময়ে ১২৫ জন সিপিএম কর্মীর রক্ত গিয়েছে। তবু আমরা আলোচনার কথা বলেছি। এখনও ধৈর্য্য রেখে সমস্যার সমাধান দাবি করছি।’’ এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদক সৌমেন বসুরও অভিযোগ, ‘‘পাহাড়ে তৃণমূলের জোর করে রাজনৈতিক জমি দখলের চেষ্টা এবং মুখ্যমন্ত্রীর অবিমৃশ্যকারিতার জন্যই পাহাড় নতুন করে উত্তপ্ত হয়েছে।’’

খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য ফের আঙুল তুলেছেন বিজেপির দিকেই। তাঁর কথায়, ‘‘পাহাড়ে আগুন জ্বালানোয় প্রত্যক্ষ মদত আছে বিজেপির। বাংলার অবিচ্ছেদ্য অংশ পাহাড়। এই অংশকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা সফল হতে পারবে না বিজেপি। ফড়ে বিমল গুরুঙ্গ, রোশন গিরিদের কথায় কি পাহাড়ের মানুষ চলবেন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন