সান্ত্বনা: নিহত জওয়ান কৃষ্ণকুমার দাসের কোচবিহারের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
পয়লা ফেব্রুয়ারি বিয়ে হয়েছিল। ছুটি কাটিয়ে স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে গিয়েছিলেন ছত্তীসগঢ়ে। জুনে ফেরার কথা ছিল।
তেরঙ্গা জড়ানো কফিনে শুয়ে তার আগেই কোচবিহার শহরে বিবেকানন্দ স্ট্রিটের বাড়িতে ফিরে এলেন কৃষ্ণচন্দ্র দাস (২৬)। মঙ্গলবার অনেক রাতে। কোচবিহারেই হাড়িভাঙা পঞ্চায়েতের আঠারোনালায় ফিরলেন বিনয় বর্মন (৩২)। নদিয়ার করিমপুরে ফিরে এলেন অরূপ কর্মকার (২৫)।
সোমবার ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদীদের গুলিতে নিহত সিআরপি জওয়ানদের মধ্যে বাংলা থেকে এই তিন জনই।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন কোচবিহারেই ছিলেন। কৃষ্ণর বাড়ি গিয়ে ৫ লক্ষ টাকা ও পরিবারের এক জনকে চাকরির আশ্বাস দেন তিনি। বিনয়ের বাড়ি দূরে হওয়ায় মাঝরাস্তা থেকে ফিরতে হয় তাঁকে। তবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়কে সেখানে পাঠান। সোমবার রাতে করিমপুরের অভয়পুর পূর্বপাড়ায় অরূপের মায়ের মোবাইলে ফোনটা আসে। ৩ বছর আগে সিআরপি-তে যোগ দেন অরূপ। প্রথম পোস্টিং ছত্তীসগঢ়েই। ফেব্রুয়ারিতে বাড়ি এসেছিলেন। বলেছিলেন, আবার পুজোয় আসবেন।
আরও পড়ুন: পাত পড়ল টিনের ঘরে
ইংরেজি অনার্স পাশ করে কৃষ্ণ সিআরপি-র চাকরি পান বছর পাঁচেক আগে। প্রথমে পঞ্জাবে ছিলেন, পরে ছত্তীসগঢ়ে বদলি হন। ফেব্রুয়ারিতে দীপান্বিতা দাসের সঙ্গে বিয়ে। প্রত্যন্ত এলাকায় ফোনের টাওয়ার পেতেন না। ছ’দিন আগে শেষ ফোন করেন। দীপান্বিতা জ্ঞান হারাচ্ছেন, মূর্চ্ছা যাচ্ছেন মা-ও। বিনয়ের বাবা খগেন বর্মন দিনমজুরি করে ছেলেকে বড় করেছেন। তিনি বলে চলেছেন, ‘‘সব ভেসে গেল!’’ টানা কেঁদে চলেছেন বিনয়ের মা আর স্ত্রী। দেড় বছরের ছেলে বিহানই শুধু কাঁদছে না।