শশীশেখর প্রসাদ।—নিজস্ব চিত্র।
গোয়ায় বেড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল খড়্গপুরের বাসিন্দা এক পর্যটকের। গত ২৩ মে স্ত্রীকে নিয়ে গোয়া বেড়াতে গিয়েছিলেন শশীশেখর প্রসাদ। মঙ্গলবার গোয়ার কোলভা সমুদ্র সৈকতে প্যারাগ্লাইডিং করার সময় দুর্ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, সমুদ্রের জলে ডুবে মৃত্যু হয় খড়্গপুরের ইন্দার বিদ্যাসাগরপুরের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের শশীশেখরবাবুর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোলবাজারের কাপড় ব্যবসায়ী শশীবাবুর শহরের একটি নামী শপিং মলেও পোশাকের শো রুম রয়েছে। একটি পোশাক প্রস্তুতকারক সংস্থা থেকে তিনি দু’জনের গোয়া ভ্রমণের প্যাকেজের সুযোগ পান। ছেলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সত্যশেখর ও মেয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী খ্যাতিশেখরকে ভাইয়ের কাছে রেখে স্ত্রী প্রীতিশেখরদেবীকে নিয়ে গোয়া যান শশীবাবু।
অভিযোগ, মঙ্গলবার বিকেলে পোলাভা সৈকতে প্যারাগ্লাইডিং করার সময় শশীবাবু সমুদ্রে পড়ে যান। জলে ডুবে তাঁর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। মৃতের স্ত্রী প্রীতিশেখরদেবী বলেন, “বিকেলে আমরা ঘুরতে বেড়িয়েছিলাম। ওঁর শখ হল প্যারাগ্লাইডিংয়ে চড়বে। অনেকটা দূর উঠে গিয়েছিল। তার পরে দশ মিনিটের মধ্যে জ্যাকেটের বেল্ট ছিঁড়ে সব শেষ। আমি কী নিয়ে বাঁচব জানি না!”
প্যারাগ্লাইডিং কী?
এ ক্ষেত্রে স্পিড বোটের সঙ্গে একটি প্যারাসুট লাগানো থাকে। স্পিড বোট সমুদ্রে দ্রুতগতিতে চলতে শুরু করলে প্রবল হাওয়ায় প্যারাসুটও অনেক উপরে উঠে যায়। প্যারাসুটের সওয়ারিকে বিশেষ বেল্ট ও জ্যাকেট পরতে হয়। ওই বেল্টের মাধ্যমেই প্যারাসুটের সঙ্গে আটকে থাকেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। প্যারাসুটের বেল্ট কোনও ভাবে আলগা হয়ে যাওয়াতেই শশীবাবু প্যারাসুট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সমুদ্রে পড়ে যান বলে অনুমান করা হচ্ছে।
ঘটনার খবর পেয়েই মঙ্গলবার রাতে শশীবাবুর ভাই গোয়ার উদ্দেশে রওনা হন। বুধবার গোয়া বিমানবন্দর থেকে অন্যদের সঙ্গে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন মৃতের স্ত্রী। শশীবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হবে। সেই কারণে আজ, বৃহস্পতিবার সকালে শশীবাবুর দেহ খড়্গপুরে নিয়ে আসা হবে।
মৃতের ভাই বলেন, “একটি সংস্থা থেকে প্যাকেজ পেয়ে অন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গোয়ায় ভ্রমণে এসে দাদার এই মর্মান্তিক পরিণতি হল। শুধুমাত্র প্যারাগ্লাইডিংয়ে উপযুক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় এমন ঘটনা ঘটে গেল।” স্থানীয় বাসিন্দা তথা জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রাজা রায় বলেন, ‘‘শশী আমার খুব পরিচিত। ওর মতো ভারী চেহারার একজনকে কী ভাবে গোয়ার সৈকতে প্যারাগ্লাইডিংয়ে অনুমতি দেওয়া হল তা নিয়ে অবাক লাগছে। ওঁর এভাবে মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।”