দিন ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আগামী বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার নির্ঘণ্ট পরিবর্তনের দাবি উঠে পড়ল।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বুধবার এ বারের মাধ্যমিকের ফল ঘোষণার মঞ্চেই জানান, ২০১৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা ১২ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে। অথচ সরস্বতী পুজো ১০ ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ সরস্বতী পুজোর এক দিন পরেই ছেলেমেয়েদের বসতে হবে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায়। কেন? প্রশ্ন উঠছে, বিতর্কও শুরু হয়েছে রাজ্য জুড়ে। বিদ্যাদেবীর আরাধনার দিনটি বিদ্যার্থীদের বড় উৎসবেরও দিন। সেই উৎসবের পিঠোপিঠি পরীক্ষার তারিখ ফেলে প্রায় ১০ লক্ষ পরীক্ষার্থী এবং তাদের পরিবারের প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন বিভিন্ন স্কুল-কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে শিক্ষা শিবিরের একাংশের প্রশ্ন, যে-সব স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষার কেন্দ্র (প্রায় তিন হাজার) হয়, সেখানে পরীক্ষার এক দিন আগে পুজো হবে কী ভাবে?
সরশুনা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক উদয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাঁরা নির্ঘণ্ট তৈরি করেছেন, তাঁদের ভেবে দেখা উচিত ছিল, প্রায় সব স্কুলেই সরস্বতী পুজো হয়। সেই পুজোর ঠিক তার এক দিন পরেই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা! কী ভাবে সম্ভব?’’ সহকারী প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষিকা কলেজিয়ামের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘কোনও স্কুলের পক্ষেই একসঙ্গে সরস্বতী পুজোর আয়োজন এবং মাধ্যমিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। তাতে বিশৃঙ্খলা হতে পারে। পর্ষদের উচিত, পরীক্ষার দিন পরিবর্তন করা।’’ একই বক্তব্য যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য, সাখাওয়াত মেমোরিয়ালের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া সিংহ মহাপাত্র ও কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দনকুমার মাইতির।
সাধারণ ভাবে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়। এ বার সেটা ১২ তারিখে এগিয়ে আনার পিছনে ভোটের অঙ্ক দেখছেন শিক্ষা জগতের অনেকে। তথ্যাভিজ্ঞ মহলের পর্যবেক্ষণ, আগামী বছর লোকসভা ভোটের দিকে নজর রেখেই মাধ্যমিক পরীক্ষা এগিয়ে আনা হয়েছে। যদিও পরীক্ষার দিন ঘোষণার সময় পর্ষদ-সভাপতি কোনও ব্যাখ্যায় যাননি।
শিক্ষক-নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘নির্বাচনের কথা ভেবে অনেক সময়েই পরীক্ষার নির্ঘণ্ট পরিবর্তন করা হয়। অথচ পরীক্ষার্থীদের উৎসবের স্বার্থ দেখছে না পর্ষদ!’’
বক্তব্য জানার জন্য ফোন করা হলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময়বাবু বলেন, ‘‘এই ব্যাপারে কথা বলার মতো সময় আমার নেই।’’