প্রতীকী ছবি।
আসর এখনও ঠিক জমেনি। সবে আলাপ শুরু করেছে বর্ষা। কিন্তু তার মধ্যেই হাজির হয়েছে ডেঙ্গি।
কলকাতার এক ডাক্তারি ছাত্রীর রক্তপরীক্ষায় (এলাইজা) ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। আবার উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর রক্তপরীক্ষায় পাওয়া গিয়েছে (এনএসওয়ান) ডেঙ্গির জীবাণু। কলকাতা পুরসভা মেডিক্যাল পড়ুয়া স্বস্তি কুমারীর রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়ার কথা স্বীকার করেছে। উত্তর দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর কিন্তু রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রী হাদিসা বানুর ডেঙ্গি হয়েছে বলে এখনই মানতে রাজি নয়। বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছে।
প্রাক্-বর্ষার বৃষ্টির সময় থেকেই ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া সম্পর্কে সতর্ক করে দিচ্ছিলেন বিশেষজ্ঞেরা। বছরের গোড়া থেকে মশা নিয়ন্ত্রণে পুরসভা, পঞ্চায়েতকে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশও দিয়েছিল নবান্ন। কিন্তু মশা নিধনের কাজে কোথাও বিশেষ গতি আসেনি।
আদতে বিহারের বাসিন্দা স্বস্তি কর্নাটক থেকে এমবিবিএস পাশ করে মে মাসে কলকাতায় আসেন। স্ত্রীরোগ নিয়ে তিনি এমডি পড়ছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। স্বস্তির বাবা লক্ষ্মী চৌধুরী রবিবার জানান, হস্টেলে জায়গা না-পেয়ে তাঁর মেয়ে দক্ষিণ শহরতলির রামগড়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠেন। তবে ২০ মে ক্লাস শুরু হওয়ার পর থেকে হাসপাতালেই থেকে যেতেন স্বস্তি। রামগড়ে আত্মীয়ের বাড়িতে যেতেন কখনও-সখনও। স্বস্তির বাবা জানাচ্ছেন, গত ১৬ জুন ধুম জ্বর নিয়ে বাড়ি ফেরেন স্বস্তি। নিজেই জ্বর কমার ওষুধ খান এবং ক্লাস করতে থাকেন।
দু’দিন পরেও জ্বর না-কমায় ২০ জুন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন স্বস্তি। প্রথমে টাইফয়েডের পরীক্ষা হয়। তবে ওই রোগের জীবাণু পাওয়া যায়নি। তার পরেই ডেঙ্গি পরীক্ষায় ওই রোগের জীবাণু ধরা পড়ে বলে স্বস্তির পারিবারিক সূত্রের খবর। সেখানেই চিকিৎসা করানোর পরে শনিবার হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। স্বস্তির বাবার বক্তব্য, সম্ভবত হাসপাতাল থেকেই তাঁর মেয়ের শরীরে ডেঙ্গি-জীবাণু ঢুকেছে। এক জন চিকিৎসককেই যদি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হতে হয়, হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা রোগীদের কী হবে, প্রশ্ন তুলছেন স্বস্তির বাবা।
কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চিকিৎসক তপনকুমার মুখোপাধ্যায় জানান, নিয়মিত নজরদারিতে গত ছ’মাসে মহানগরীতে ৩৩ জন ডেঙ্গি রোগীকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং নজরদারি চলছে বলে পুরসভার দাবি। দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডির বাসিন্দা হাদিসা থাকেন রায়গঞ্জের একটি মেসে। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৯ জুন রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ছাড়া
পান গত শুক্রবার। পরে আবার জ্বর আসায় শনিবার ওই হাসপাতালেই তাঁকে ফের ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এনএসওয়ান পরীক্ষায় তাঁর রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গিয়েছে।