প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের ডেঙ্গি দমনে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী।
আবেদনকারীর আইনজীবী প্রতীপকুমার চট্টোপাধ্যায়, মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, ডেঙ্গি দমনে আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে হস্তক্ষেপ করতে নির্দেশ দিক। পাশাপাশি ডেঙ্গিকে ‘মহামারি’ ঘোষণা করার দাবিও জানানো হয়েছে ওই আবেদনে। ডেঙ্গিতে মৃত ব্যক্তিদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদনও করেছেন অধীরবাবু।
আরও পড়ুন: গাঁ উজাড় করে মৃত্যু রোজগেরের, আঁধারে কল্পনারা
রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সুদনের সঙ্গেও দেখা করেছেন অধীর চৌধুরী। রাজ্যে ডেঙ্গি মহামারির আকার নিলেও, পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিষয়টিকে চেপে দেওয়ার জন্য ‘অজানা জ্বর’ হিসাবে উল্লেখ করছে বলে অভিযোগ করেন অধীরবাবু। তিনি দ্রুত রাজ্যে কেন্দ্রীয় দল পাঠানোর জন্যও অনুরোধ করেন। স্বাস্থ্যসচিব জানিয়েছেন, খুব দ্রুত দল যাবে পশ্চিমবঙ্গে।
ডেঙ্গি গত সপ্তাহে তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের এক গবেষক, এক আইনজীবীও। বিজেপির চিকিৎসক সেলের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ওই সব মামলায় কেউ আবেদন করেছেন, গত কয়েক মাসে বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গিতে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের ‘বেড টিকিট’ আদালতে পেশ করার জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিক আদালত। তাতে বোঝা যাবে, ডেঙ্গিতেই মৃত্যু হয়েছে, না অন্য কোনও রোগে। মৃতের কোন ধরনের রক্ত পরীক্ষা হয়েছিল, জানা যাবে তা-ও।
আবার কোনও মামলাকারী আদালতে আবেদন করেছেন, গ্রামে গ্রামে ভ্রাম্যমান রক্ত পরীক্ষার গাড়ি পাঠানোর জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিতে। কারণ, গ্রামের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডেঙ্গি আক্রান্তদের রক্ত পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হলেও জেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে ছয়-সাত দিন লেগে যাচ্ছে। আবার, কোনও আবেদনে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে দিয়ে আরও বেশি রক্তদান শিবির খুলে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে প্লেটলেট সরবরাহের কথাও বলা হয়েছে। মানুষকে আতঙ্ক মুক্ত করে, ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা বাড়িয়ে মানুষকে ওই রোগ দমনে কাজে লাগানোর কথাও বলা হয়েছে একটি মামলায়।
ওই তিনটি আবেদনই গ্রহণ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। গত ৩ নভেম্বর মামলাগুলির দ্রুত শুনানির জন্য হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আবেদনকারীদের আইনজীবীরা। ওই দিন ডিভিশন বেঞ্চ ডেঙ্গি নিয়ে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকারকে। আগামী ১০ নভেম্বর মামলাগুলির একত্রে শুনানি হবে বলে ওই দিনই জানিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ।