খোদ শিক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও কলেজে ভর্তিতে দুর্নীতি এবং বাড়তি পড়ুয়া নেওয়ার মতো অনিয়ম চলছে বলে শিক্ষা শিবিরের একাংশের অভিযোগ। এই অবস্থায় সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত সব কলেজের কাছে অবিলম্বে চলতি মরসুমের ছাত্রছাত্রী ভর্তির যাবতীয় তথ্য চেয়ে পাঠাল রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর।
ডিরেক্টর অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশনস জয়শ্রী রায়চৌধুরী শুক্রবার এক নির্দেশে সব কলেজকে তাদের মোট আসন এবং সব বিষয়ে এ-পর্যন্ত কত পড়ুয়া ভর্তি হয়েছেন, তার হিসেব দ্রুত পাঠিয়ে দিতে বলেছেন। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, খতিয়ানের পালা এখানেই শেষ হচ্ছে না। এর পরে বিষয়-ভিত্তিক পড়ুয়া ভর্তির হিসেবও চাওয়া হবে।
ভর্তির মরসুম শুরু হতেই বিভিন্ন কলেজে টাকার বিনিময়ে ভর্তিj অভিযোগ উঠেছে। কলেজে ঠাঁই পাওয়ার জন্য টাকার লেনদেন চলছে বলে ইঙ্গিত করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। এই ধরনের অনিয়মের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আঙুল উঠছে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের দিকে। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়ে দেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় নিজেরা আসন ও ভর্তির তথ্য না-দিলে উচ্চশিক্ষা দফতর নিজেরাই তা জোগাড় করার বন্দোবস্ত করবে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন কলেজের আসন ও ভর্তির যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পরিদর্শকদল তৈরি করা হয়েছে।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের তৎপরতা সত্ত্বেও বিভিন্ন কলেজের বিরুদ্ধে এখনও অভিযোগ উঠছে যে, টাকা নিয়ে পড়ুয়া ভর্তি করানোর অপচেষ্টার বিরাম নেই। এমন অভিযোগ মধ্য কলকাতার মৌলানা আজাদ কলেজের বিরুদ্ধেও। শিক্ষা সূত্রের খবর, উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে এ দিন ওই কলেজে এই বিষয়ে খোঁজখবরও নেওয়া হয়েছে। ডিএসও-র সহ-সভাপতি সামসুল আলমের অভিযোগ, মৌলানা আজাদে একেবারে খোলাখুলি টাকা নিয়ে ছাত্র ভর্তি করানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘এর সঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ জড়িত।’’ এ বিষয়ে মৌলানা আজাদ কলেজের অধ্যক্ষ বিজয় রায়কে ফোন এবং এসএমএস করেও কোনও জবাব পাওয়া যায়নি।
যে-সব কলেজের বিরুদ্ধে ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, আশুতোষ কলেজ তার অন্যতম। আরটিআই বা তথ্য জানার অধিকার আইনে ওখানে ভর্তির তথ্য চেয়ে আবেদন করেছেন আত্মজ্যোতি মিত্র নামে এক ব্যক্তি। আত্মজ্যোতিবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আশুতোষ কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিয়মের বিষয়টি বিশদ ভাবে জানতে চাই। তাই আরটিআই করেছি।’’ ওই কলেজে গত পাঁচ বছরে ছাত্র সংসদের খরচের হিসেবও জানতে চেয়েছেন তিনি।