মেঘ হটিয়ে রঙের উৎসবেই ঘুরে দাঁড়াল বসন্ত

কয়েক দিনের ছদ্ম-শ্রাবণের হম্বিতম্বিতে মনমরা হয়ে পড়েছিল ফাল্গুন। অবশেষে বসন্তোৎসবেই স্বমহিমায় ফিরে এল বসন্ত। অকালের মেঘ নিয়ে হাওয়া অফিসের সংশয়-সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ে ছুটির দিনের দখল নিল আবির আর রং। বাঙালির দোল দিনভর ভিজল ঠিকই।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৭ ০৩:৪৬
Share:

কয়েক দিনের ছদ্ম-শ্রাবণের হম্বিতম্বিতে মনমরা হয়ে পড়েছিল ফাল্গুন। অবশেষে বসন্তোৎসবেই স্বমহিমায় ফিরে এল বসন্ত। অকালের মেঘ নিয়ে হাওয়া অফিসের সংশয়-সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ে ছুটির দিনের দখল নিল আবির আর রং। বাঙালির দোল দিনভর ভিজল ঠিকই। তবে অকালবর্ষণে নয়, রঙে-আবিরেই।

Advertisement

কয়েক দিন ধরে মেঘ-বৃষ্টির পালা চলছিল দক্ষিণবঙ্গে। উধাও হয়ে গিয়েছিল শেষ ফাগুনের গরম। সেই স্বস্তি মন্দ লাগছিল না অনেকেরই। তবে লাগাতার বৃষ্টির জেরে দোলের আনন্দ মাটি হবে কি না, সমানে আশঙ্কা জাগাচ্ছিল সেই দুর্ভাবনা।

পাটুলির কলেজছাত্র অরূপ দাসঠাকুর যেমন শনিবার বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে নে়ড়াপোড়ার আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু বিকেল হতে না-হতেই শ্রাবণের মতো মেঘ ডেকে যে-ভাবে বৃষ্টি নামল, তাতে বহ্ন্যুৎসবের আয়োজন মাটি হওয়ার জোগাড়। এই অবস্থায় রবিবারের সব রং ধুয়ে যাবে কি না, সেই চিন্তায় মুষড়ে পড়েছিলেন অরূপ। শেষ পর্যন্ত মেঘ সরে গিয়ে রঙের উৎসবে ছন্দ বজায় থাকায় অন্য অনেকের মতো স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন তিনিও। সে-ভাবে রাস্তায় নেমে হুড়ুদ্দুম দোল খেললেন না মধ্যমগ্রামের দেবর্ষি চট্টোপাধ্যায়। তবে প্রকৃতির সময়োচিত কাণ্ডজ্ঞান দেখে আপ্লুত তিনিও। ‘‘এই না-হলে দোলের আবহাওয়া! একেবারে খাঁটি বসন্তোৎসবের পটভূমি,’’ রবিবার সকালে বলছিলেন দেবর্ষি।

Advertisement

আসলে আবহাওয়ার মেজাজমর্জি নিয়ে হাওয়া অফিসও ধন্দে থাকায় আমজনতার দুশ্চিন্তা বাড়ছিল। গত কয়েক দিনে প্রকৃতি যা খেল্‌ দেখিয়েছে, তাতে দোলের দিন কী হবে, তা নিয়ে আবহবিদদের মনেও সংশয় ছিল ষোলো আনা। শনিবার সন্ধ্যায় এক আবহবিজ্ঞানী বলেছিলেন, ‘‘রবিবার বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। কিন্তু একেবারে হবে না, এমন কথাও বলতে পারছি না।’’

এই টানাপড়েনের মূলে আছে প্রকৃতির খামখেয়াল। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, সাগর থেকে জোলো হাওয়া ঢুকছিল সমানে। গরমও চোখ রাঙাতে শুরু করেছিল। বিক্ষিপ্ত ভাবে তৈরি হচ্ছিল মেঘ। সব মিলিয়েই বসন্তে বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি ঘনিয়ে আসে কলকাতা-সহ সারা দক্ষিণবঙ্গে। তাই পূর্বাভাস দিতে গিয়ে নিশ্চিত হতে পারছিলেন না বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানান, বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জগুলি খুব বেশি লম্বা হচ্ছে না। সেই জন্য ছোট ছোট এলাকার উপরে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। গত তিন দিনে কলকাতায় যে-বৃষ্টি হয়েছে, তাতে গত দশ বছরের মার্চের রেকর্ড গিয়েছে ভেঙে।

আবহাওয়া দফতরের খবর, মেঘ-বৃষ্টির খেলা কমতে চলেছে। আকাশে মেঘ এ বার কমে যাবে। তার ফলে বাড়বে তাপমাত্রা। তা হলে কি চৈত্রের শুরুতেই শুরু হতে চলেছে দহনজ্বালা, ভালয় ভালয় দোল কাটলেও এই প্রশ্ন ফের চিন্তা বাড়াচ্ছে বঙ্গবাসীর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement