বিদ্যুৎরেখা: আকাশ চিরে আলো। বুধবার দুবরাজপুরে। নিজস্ব চিত্র
নির্দিষ্ট সময়ের কিছু আগে কেরলে ঢুকলে কী হবে! বারবার আটকে যাচ্ছে বর্ষা এক্সপ্রেস। মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে পৌঁছেই দাক্ষিণাত্যে হোঁচট খেয়েছিল সে। তার পরে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে দক্ষিণবঙ্গে যদি বা এল, ফের থমকে গিয়েছে বর্ষা। তিন দিন ধরে ঠায় একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে সে। মেজাজটাও কেমন যেন ছন্নছাড়া!
বঙ্গোপসাগরের প্রবল নিম্নচাপের দৌলতে সোমবার দিঘা দিয়ে রাজ্যে ঢুকেছিল মৌসুমি বায়ু। একই দিনে গাঙ্গেয় বঙ্গের কয়েকটি জেলার উপর দিয়ে পৌঁছে গিয়েছিল উত্তরবঙ্গে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। বুধবার পর্যন্ত রাঢ়বঙ্গে পা রাখতে পারেনি বর্ষা।
হাওয়া অফিস বর্ষা এক্সপ্রেসের বাংলায় পৌঁছনোর কথা জানালেও আবহাওয়ার মতিগতি কিন্তু সেই সুখবরের সঙ্গে সঙ্গত করছে না। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে কার্যত বৃষ্টি মিলছে না। ভ্যাপসা গরমের অস্বস্তিও ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, বর্ষা থমকে যাওয়ায় বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমানের মতো জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে। দক্ষিণবঙ্গে যা-ই হোক, উত্তরবঙ্গে বর্ষা জোরদার হচ্ছে। আজ, বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, কালিম্পঙে ভারী ব়ৃষ্টি হতে পারে। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের একাংশে।
বর্ষার এমন হাল কেন?
পশ্চিম ভারতের ছিনতাইবাজ নিম্নচাপ মৌসুমি বায়ুকে টেনে নিয়ে যাওয়ায় বঙ্গে বর্ষার আগমনে দেরি হচ্ছিল। বঙ্গোপসাগরের পাল্টা একটি প্রবল নিম্নচাপ তাকে উদ্ধার করে বাংলায় পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু নিজের দাপট অক্ষুণ্ণ রাখতে পারছে না। আবহবিদদের একাংশের ব্যাখ্যা, বঙ্গোপসাগরে অতিগভীর নিম্নচাপের হেঁচকা টানে বর্ষা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে হাজির হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু প্রকৃতির নিয়মেই সেই অতিগভীর নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে। তাই বর্ষার শক্তি কমেছে। থমকে গিয়েছে সে। প্রায় নট নড়নচড়ন দশা! দিন তিনেক পরে বর্ষা ফের এক দফা চাঙ্গা হবে। তখনই পুরো দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ছড়িয়ে পড়বে বলে জানাচ্ছেন আবহবিদেরা।