Dengue In Kolkata

ডেঙ্গির লার্ভা যাদবপুরে! বাঘাযতীন হাসপাতালের হাল দেখে ক্ষুব্ধ অতীন, জানাবেন অভিযোগ

দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর, বাঘাযতীন, বিজয়গড় এলাকা পরিদর্শন করে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ করলেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। প্রশাসনিক গাফিলতি চোখে পড়তেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:৪১
Share:

বাঘাযতীন হাসপাতালে গিয়ে সুপারের ওপর ক্ষোভ উগরে দিলেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে শহর পরিদর্শনে নেমে সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। সোমবার করম পুজো উপলক্ষে সরকারি ছুটি হলেও সকাল থেকেই দক্ষিণ কলকাতার ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকাগুলিতে যান তিনি। দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর, বাঘাযতীন, বিজয়গড় এলাকা পরিদর্শন করে যেমন ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ করলেন, তেমনই প্রশাসনিক গাফিলতি চোখে পড়তেই ক্ষোভও উগরে দিয়েছেন প্রশাসনের ওপরেই।

Advertisement

প্রথমে যাদবপুরের কাছে কৃষ্ণা গ্লাস ফ্যাক্টরিতে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের নিয়ে যান অতীন। ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে ১২ বিঘা জমির ওপর কৃষ্ণা গ্লাস ফ্যাক্টরি। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ কারখানা চত্বরে আগাছার জঙ্গল ও নোংরার স্তূপ হয়ে রয়েছে। কারখানার ফুটো ছাদ দিয়ে বৃষ্টির জল পড়ে কারখানা চত্বরে মশার আঁতুড়ঘরে তৈরি হয়েছে বলেই জেনেছেন তিনি। বন্ধ কারখানায় মশার লার্ভাও মিলেছে বলেই পুরসভা সূত্রে খবর। ওই কারখানা চত্বরে ড্রোন দিয়ে মশা মারার স্প্রে করা হয় অতীনের উপস্থিতিতেই। এর পর ডেপুটি মেয়র যান বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের পরিস্থিতি ও পরিবেশ দেখে ক্ষোভ উগরে দেন অতীন। পরিস্থিতি দেখে এতটাই ক্ষুব্ধ হন ডেপুটি মেয়র, যে সেখানে দাঁড়িয়েই হাসপাতাল সুপারের বিরুদ্ধে সরাসরি স্বাস্থ্য ভবনে অভিযোগ জানানোর কথা বলেন তিনি। সেখানেই ডেপুটি মেয়রের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, স্থানীয় পুর প্রশাসনের উপর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে অতীন জানতে পারেন হাসপাতাল সুপার দীর্ঘ দিন ধরেই হাসপাতালে আসেন না। শুধু তাই নয়, সকাল থেকেই একাধিক বার তাঁকে কলকাতা পুরসভা স্বাস্থ্য কর্তারা ফোন করলেও ধরেননি। আর তাতেই বেজায় চটেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মেয়র পরিষদ সদস্য ও কলকাতার ডেপুটি মেয়র। ক্ষোভের সুরে তিনি বলেন, ‘‘চারদিকে এমন ডেঙ্গি পরিস্থিতি তার মধ্যে দীর্ঘ দিন সুপার হাসপাতালে আসেন না। আমি ডিরেক্টর অব হেলথ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে জানাব।’’ অভিযোগের সুরে তিনি আরও বলেছেন, ‘‘এই হাসপাতালের যিনি সুপার তাকে পাওয়া যায় না।আমি তার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য ভবনে অভিযোগ জনাব। তিনি বেশির ভাগ সময় আসেন না। তবে সহকারী সুপার সক্রিয়। সুপার নিয়মিত না এসেও ওই পদে আছেন। স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে কথা বলব এমন সময় সুপার না এলে তো পরিষেবা দিতে সমস্যা তৈরি হবে। শ্রমিক আবাসন সমস্যা ছিল সেটা পরিষ্কার করা হয়েছে।’’এর পর বিজয়গড় স্টেট জেনারেল হাসপাতালেও যান তিনি।

Advertisement

শহরে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের কারণে এ বার কলকাতা পুরসভার সব স্বাস্থ্যকেন্দ্র রাত পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার এক বি়জ্ঞপ্তি জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। সপ্তাহে তিন দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত খোলা থাকবে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র। আর সপ্তাহে দু’দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা রাখা হবে এগুলি। সোম, বুধ ও বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত মিলবে পরিষেবা। মঙ্গল এবং শুক্রবার সকাল ১১ টা থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলা থাকবে। আর শনিবার স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলা থাকবে সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, গত সপ্তাহেই স্বাস্থ্য দফতর এক নির্দেশিকা জারি করেছে। যেখানে সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগী দেখার সময়সীমা বা়ড়ানোর কথা বলা হয়েছে। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সোম, বুধ, বৃহস্পতি ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টো কিংবা শেষ রোগী থাকা পর্যন্ত বহির্বিভাগ খোলা রাখতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সোমবার রাজ্যের সমস্ত জেলার জেলাশাসক এবং স্বাস্থ্য ভবনের কর্তা, আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। ওই বৈঠকে থাকছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক, জেলা স্বাস্থ্যকর্তা এবং মেডিক্যাল কলেজের সদস্যেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন