College Drop Outs

কলেজের ‘ড্রপ আউট’ বাড়ছে উত্তরে, রিপোর্ট

উত্তরবঙ্গের চার জেলা কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ের কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে বাজেট অধিবেশনের প্রথম পর্বে এই রিপোর্ট জমা দিয়েছে কমিটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৪১
Share:

‘ড্রপ আউট’ বাড়ছে উত্তরবঙ্গে। প্রতীকী ছবি।

কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়লেও স্নাতকস্তরের আগে ‘ড্রপ আউট’ বাড়ছে উত্তরবঙ্গে। রাজ্য বিধানসভার উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্টে এই উদ্বেগ ধরা পড়েছে। এবং দারিদ্র, কলেজের দূরত্ব এবং ছাত্রীদের বিয়ের কারণেই এই পরিস্থিতি গুরুতর আকার নিয়েছে বলে মনে করছে ওই কমিটি।

Advertisement

তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরে রাজ্যে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে। বিভিন্ন সময় সরকারের সাফল্য হিসেবে এই তথ্যকে সামনে রাখে রাজ্য সরকার। কিন্তু বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির সাম্প্রতিকতম রিপোর্টে সেই সাফল্য নিয়ে একগুচ্ছ প্রশ্ন উঠছে। উত্তরবঙ্গের চার জেলা কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ের কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে বাজেট অধিবেশনের প্রথম পর্বে এই রিপোর্ট জমা দিয়েছে কমিটি। রিপোর্টে এই ‘ড্রপ আউট’ ছাড়াও শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং পরিকাঠামোর অভাব স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে। বিধানসভায় সরকার পক্ষের উপমুখ্যসচেতক তাপস রায় বলেন, ‘‘১০-১২ বছরে শিক্ষার সম্প্রসারণে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ করেছে তৃণমূল সরকার। নিশ্চিত ভাবে স্ট্যান্ডিং কমিটির সুপারিশও যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।’’

ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, স্নাতক স্তরের আগে এই ‘ড্রপ আউট’ বড় সমস্যাগুলির অন্যতম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যার কারণ বিশ্লেষণ করে কমিটি বলেছে, ‘আর্থিক কারণেই ছাত্রেরা (ওই অংশ) পড়া ছেড়ে জীবিকা-সন্ধানে নামতে বাধ্য হচ্ছে।’ প্রসঙ্গত, রাজ্য ভাগের বিরোধিতায় বাজেট অধিবেশনে যে প্রস্তাব আনা হয়েছিল, তা নিয়ে আলোচনায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অপ্রতুলতার অভিযোগে সরব হয়েছিলেন বিরোধী শিবিরের একাংশ। স্ট্যান্ডিং কমিটির এই রিপোর্টে সেই অভিযোগে আংশিক ভাবে ‘সিলমোহর’ পড়েছে বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করছে। কমিটি অবশ্য রিপোর্টে বলেছে, ‘এক বারে এই আর্থ-সামাজিক সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।’ তবে তা দূর করতে গত কয়েক বছরে রাজ্য সরকার সব রকম চেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।

Advertisement

স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্টে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাবৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে উচ্চশিক্ষায় রাজ্য সরকারের বহু উদ্যোগেরও উল্লেখ রয়েছে। সেই সঙ্গেই বলা হয়েছে, ‘তা হলেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ হয়নি।’ সেই সঙ্গে অশিক্ষক কর্মীর অভাবের কথা উল্লেখ করে রিপোর্টে সেই শূন্যস্থান পূরণের কথা বলা হয়েছে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালগুলি এখনও ‘সদ্যোজাতের পর্যায়ে’ আছে বলে জানিয়েছে কমিটি। তবে সেগুলির মানোন্নয়নে উচ্চশিক্ষা দফতর আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। পরিদর্শনে গিয়ে কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসঘর, লাইব্রেরির মতো অন্যান্য সহায়ক ও আবশ্যিক কিছু বিষয়ের অভাবও দেখেছে কমিটি।

শাসক ও বিরোধী সদস্যের নিয়ে গঠিত বিধানসভার ওই কমিটির সদস্য বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মণের কথায়, ‘‘কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করলেই হবে না। ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজনীয় বিষয় পড়ানো না হলে তাঁদের আগ্রহ থাকবে কেন? তা ছাড়া শিক্ষান্তে চাকরি নিয়ে এই সরকার যা করেছে, তাতে সাধারণ ভাবে ছাত্রছাছাত্রীরা আগ্রহ হারাচ্ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন