purulia

কিষেণজির মৃত্যু বার্ষিকীর আগে জঙ্গলমহল ছাড়ল ১৪ কোম্পানি সিআরপিএফ

২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর ঝাড়গ্রামের জামবনি থানার বুড়িশোল জঙ্গলে যৌথবাহিনীর গুলিতে নিহত হন সিপিআই (মাওবাদী)-র পলিটব্যুরো সদস্য তথা সংগঠনের কেন্দ্রীয় মিলিটারি কমিশনের ইনচার্জ এম কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২০ ১৬:০৪
Share:

ছত্তীসগঢ়গামী সিআরপিএফ বাহিনী— নিজস্ব চিত্র।

মাওবাদী নেতা কিষেণজির নবম মৃত্যু বার্ষিকীর ৩ দিন আগে জঙ্গলমহল থেকে সরল সিআরপিএফের ২টি ব্যাটালিয়ন। প্রশাসন সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতে পুরুলিয়া এবং ঝাড়গ্রাম থেকে ২টি স্পেশাল ট্রেনে মোট ১৪ কোম্পানি সিআরপিএফ ছত্তীসগঢ়ের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছে।

Advertisement

এ দিকে শুক্রবারই পুরুলিয়ার মাওবাদী উপদ্রুত কোটশিলা থানার শ্যামপুর মোড় থেকে পুলিশ মাওবাদীদের নামে প্রচারিত কিছু পোস্টার উদ্ধার করেছে। সাদা কাগজে লাল কালিতে বাংলায় লেখা ‘রাজ্য সরকার হুঁশিয়ার। কিষেণজির বদল চাই। পুলিশ দল হুঁশিয়ার। নেতা দল হুঁশিয়ার। সিপিআই(মাওবাদী)’।

গত ৫ নভেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাঁকুড়া সফরের দিনে জঙ্গলমহল থেকে সিআরপিএফের ৫০ এবং ১৬৫ নম্বর ব্যাটালিয়ানকে ছত্রিসগঢ় পাঠানোর নির্দেশ আসে। এর পর ১০ নভেম্বর এই দুই ব্যাটালিয়ানের আধিকারিকরা রায়পুরে সিআরপিএফের ছত্রিশগড় সেক্টরের আইজির সঙ্গে বৈঠক করেন। পাশাপাশি, সেখানে যে সব ক্যাম্পে এই বাহিনী থাকবে সেই সব জায়গাও পরিদর্শন করেন।

Advertisement

পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়কে ঘিরে থাকা মাঠা, বাঘমুণ্ডি, পাথরবাঁধ, সিরকাবাদ, মুরগুমার পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরের ভীমপুরে ৫০ নম্বর ব্যাটালিয়ানের ৬টি কোম্পানির পৃথক শিবির ছিল। অন্য দিকে, ঝাড়গ্রামের কানকরাঝোর ও বুড়িঝোর, পশ্চিম মেদিনীপুরের চ্যাংশোল ও রামগড় পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্ব সামলেছেন ১৬৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা।

পুলিশ সূত্রে খবর, ৫০ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানদের জন্য পুরুলিয়া থেকে ২১ কামরার একটি স্পেশাল ট্রেন শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ রওনা দেয়। অন্য দিকে, ঝাড়গ্রাম স্টেশন থেকে ১৮ বগির অন্য একটি স্পেশাল ট্রেন ১৬৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের জাওয়ানদের নিয়ে গন্তব্যে পাড়ি দেয়।

আইজি সিআরপিএফ (পশ্চিমবঙ্গ সেক্টর) প্রদীপকুমার সিংহ শনিবার বলেন, ‘‘২টি স্পেশাল ট্রেনে আমাদের ২টি ব্যাটালিয়নের ১৪টি কোম্পানি ছত্তীসগঢ় গিয়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, এই দুই ব্যাটালিয়নের ছেড়ে যাওয়া ১৪টি ক্যাম্প আপাতত সামাল দেবে রাজ্য পুলিশ এবং সিআরপিএফের অন্য ব্যাটালিয়ানগুলি।

আরও পড়ুন: ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মিথ্যা মামলা, ১৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ আদালতের

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর ঝাড়গ্রামের জামবনি থানার বুড়িশোল জঙ্গলে যৌথবাহিনীর গুলিতে নিহত হন সিপিআই (মাওবাদী)-র পলিটব্যুরো সদস্য তথা সংগঠনের কেন্দ্রীয় মিলিটারি কমিশনের ইনচার্জ এম কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজি। প্রতি বছর এই দিনটিকে স্মরণ করে মাওবাদীরা ‘শহিদ সপ্তাহ’ পালন করেন।

আরও পড়ুন: মেঠো কবাডি থেকে সবুজ গল্ফ কোর্সে, নব্য অবতারে ময়দানে নয়া দিলীপ

কিষেণজির মৃত্যুর পরে জঙ্গলমহলের একাধিক মাওবাদী নেতা-নেত্রী আত্মসমর্পণ করেন এবং গ্রেফতার হন। তার পর থেকে গত ৯ বছরে জঙ্গলমহলে উল্লেখযোগ্য কোনও নাশকতার ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু সীমান্ত জেলা পুরুলিয়াকে ঘিরে থাকা ঝাড়খণ্ড একাধিক মাওবাদী হামলার সাক্ষী হয়েছে। ফলে কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নেওয়ায় কিছুটা চিন্তিত সংশ্লিষ্ট দুই জেলার প্রশাসন এবং রাজনৈতিক মহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন