বায়ো-গ্যাসের চুল্লি বন্ধ করে জলপ্রকল্প

গঙ্গাদূষণ এবং বায়ুদূষণ এড়িয়ে শবদাহের জন্য দশ বছর আগে ভদ্রেশ্বরের বাবুঘাটে তৈরি হয়েছিল বায়ো-গ্যাসের চুল্লি। কিন্তু চালুর কিছু দিন পর থেকেই সেই চুল্লি কার্যত অচল হয়ে পড়ে। তাই সেই চুল্লি বন্ধ করে দিয়ে এ বার ওই জমিতে জলপ্রকল্প তৈরিতে উদ্যোগী হল ভদ্রেশ্বর পুরসভা।

Advertisement

তাপস ঘোষ

ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৪ ০১:১৬
Share:

পড়ে আছে পরিত্যক্ত চুল্লি।—নিজস্ব চিত্র।

গঙ্গাদূষণ এবং বায়ুদূষণ এড়িয়ে শবদাহের জন্য দশ বছর আগে ভদ্রেশ্বরের বাবুঘাটে তৈরি হয়েছিল বায়ো-গ্যাসের চুল্লি। কিন্তু চালুর কিছু দিন পর থেকেই সেই চুল্লি কার্যত অচল হয়ে পড়ে। তাই সেই চুল্লি বন্ধ করে দিয়ে এ বার ওই জমিতে জলপ্রকল্প তৈরিতে উদ্যোগী হল ভদ্রেশ্বর পুরসভা।

Advertisement

কাঠের চুল্লি থেকে দূষণ রোধের জন্যই ২০০৫ সালে গঙ্গার ধারের ওই শ্মশানে বায়ো-গ্যাসের চুল্লি বসায় তত্‌কালীন বাম পরিচালিত পুরসভা। গোবর থেকে তৈরি গ্যাসের মাধ্যমে যাতে শবদাহ করা যায়, সে জন্য তৈরি করা হয় প্রকল্প। এ জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর বরাদ্দ করে ৫ লক্ষ টাকা, ভদ্রেশ্বর পুরসভা দেয় দেড় লক্ষ টাকা। গোবর মজুতের জন্যও আলাদা জায়গা বাছা হয়।

পুরসভা সূত্রের খবর, চুল্লিটি চালুর পরে কয়েক দিন দেহ দাহ করা হলেও মৃতের আত্মীয়-পরিজনেরা সন্তুষ্ট হতে পারছিলেন না। কেননা, প্রযুক্তিগত ত্রুটির জন্য দেহ সম্পূর্ণ দাহ হত না। সেই দেহ চুল্লি থেকে বের করে ফের কাঠের চুল্লিতে পোড়ানো হত। তা ছাড়া, বায়ো-গ্যাসের চুল্লিতে দাহকাজে সময়ও লেগে যাচ্ছিল চার-পাঁচ ঘণ্টা। তাই ধীরে ধীরে ওই চুল্লিতে পোড়ানো বন্ধ হয়ে যায়। চুল্লিটি কার্যত অচল হয়ে পড়ে। তাই সেই চুল্লিই তুলে দিয়ে ওই জমিতে এ বার জলপ্রকল্প তৈরির পরিকল্পনা করেছে পুরসভা।

Advertisement

পুরপ্রধান তৃণমূলের দীপক চক্রবর্তী বলেন, “প্রযুুক্তিগত সমস্যার কারণে বায়ো-গ্যাসের চুল্লিটি অচল হয়ে গিয়েছে। ত্রুটিমুক্ত করে সেটি চালু করতে অনেক খরচ। তা ছাড়া, বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরি হয়ে যাওয়ায় আগের চুল্লিটির প্রয়োজনীয়তাও আর সেই। তাই ওই জায়গায় জলপ্রকল্প তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তা রূপায়িত হলে ভদ্রেশ্বর অঞ্চলে পানীয় জলের সমস্যার সমাধান হবে।”

বর্তমানে ভদ্রেশ্বর পুর এলাকায় কোনও পানীয় জলের প্রকল্প নেই। গভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জল তুলে তা সরবরাহ করা হয়। পানীয় জল আসে চন্দননগরের গোন্দলপাড়া জলপ্রকল্প থেকে। তা সত্ত্বেও, ভদ্রেশ্বরে বেশ কিছু এলাকার বাসিন্দারা বছরভর জলের সমস্যায় ভোগেন। রাস্তা এবং বাড়ির কলে সুতোর মতো জল পড়ে বলে তাঁদের অভিযোগ। সেই সমস্যা মেটাতেই এ বার উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা তৈরি করে তা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে পুর কর্তৃপক্ষের দাবি।

প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের দেবগোপাল চক্রবর্তী জলপ্রকল্প তৈরির পরিকল্পনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “কিছু ত্রুটির জন্য বায়ো-গ্যাসের চুল্লিটি বেশি দিন চালানো যায়নি। তবে, সেই জায়গায় জলপ্রকল্পের যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা ভাল। মানুষ উপকৃত হবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন