ছাউনি নেই। খোলা আকাশের নীচেই বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। ছবি: সুব্রত জানা।
নেই ছাউনি। নেই পানীয় জলের সুব্যবস্থা। অভাব রয়েছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতারও।
বছরের পর বছর এ ভাবে চললেও পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য কোনও প্রশাসনিক উদ্যোগ নেই আমতার সিটিসি বাসস্ট্যান্ডে। এমনই অভিযোগ নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষের। বস্তুত, যাত্রী পরিষেবার ন্যূনতম ব্যবস্থা নেই বাসস্ট্যান্ড। অথচ প্রতিদিন এখান থেকে কমপক্ষে ১০টি রুটের শতাধিক বাস, ট্রেকার চলাচল করে। যাতায়াত করেন ছাত্রছাত্রী-সহ কয়েক হাজার নিত্যযাত্রী ও সাধারণ যাত্রী। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই বাসস্ট্যান্ডে বিন্দুমাত্র যাত্রী পরিষেবা না-থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই।
হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার বাগনান, ডোমজুড়ের পর অন্যতম ব্যস্ত বাসস্ট্যান্ড আমতা সিটিসি বাসস্ট্যান্ড। আমতা-বাগনান, আমতা-উলুবেড়িয়া, আমতা-সাঁকরাইল, আমতা-ধর্মতলা সিটিসি বাস, আমতা-দমদম এয়ারপোর্ট রুটের বাস চলাচল করে এই স্ট্যান্ড থেকে। এ ছাড়া মুন্সীরহাট, বড়গাছিয়া, আমতা-উদয়নারায়ণপুর রুটের বহু ট্রেকার, ম্যাজিক, অটো, মোটরভ্যান চলে।
বাসস্ট্যান্ডের ঢিল ছোড়া দূরত্বে আমতা গ্রামীণ হাসপাতাল, আমতা-১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির অফিস, বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া বালিকা বিদ্যালয়। কিছুটা দূরে আমতা কলেজ, নিত্যানন্দ হাইস্কুল, আমতা পীতাম্বর হাইস্কুল, আমতা থানা। ফলে, প্রতিদিন কমপক্ষে তিন থেকে চার হাজার হাজার লোক ওই সব জায়গায় কাজে আসেন এবং ছাত্রছাত্রীরাও পড়তে আসে। যাতায়াতের জন্য আমতা বাসস্ট্যান্ডের উপরই তাঁরা নিভর্র্রশীল।
কিন্তু যাত্রী পরিষেবার কথা ভেবে আজ পর্যন্ত বাসস্ট্যান্ডের পরিকাঠামোর উন্নতি হয়নি। বলা ভাল নজর নেই জেলা প্রশাসনের। স্থানীয় দোকানদার ও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, বাসস্ট্যান্ডে পরিস্রুত পানীয় জলের চরম সমস্যা রয়েছে। তীব্র গরমে দুর্বিষহ অবস্থা যাত্রী থেকে বাসচালক, কন্ডাক্টরদের। একটি মাত্র নলকূপ রয়েছে বাসস্ট্যান্ডের এক ধারে। একটা ট্যাপ কল থাকলেও সব সময় সেখান থেকেও জল পাওয়া যায় না। অভিজিৎ বাকুলি নামে এক দোকানদার জানান, যে নলকূপটি রয়েছে, তর জল অত্যন্ত নোংরা, মাঝে মাঝে কেঁচোও বের হয়। ফলে ওই জল মুখে তুলতে কে সাহস করবেন? তাই তাঁরা সকলেই পাশের পঞ্চায়েত সমিতির অফিস থেকে পানীয় জল নিয়ে আসেন। আর যাত্রীরা দোকানদারদের কাছ থেকেই চেয়েচিন্তে জল খান। সুলভ শৌচালয় অবশ্য রয়েছে। তবে তা সব সময় নোংরা হয়ে পড়ে থাকে। পরিষ্কারের বালাই নেই বললেই চলে। দুর্গন্ধে টেঁকা যায় না।
গোটা বা রয়েছে। তাও সংস্কারের অভাবে জীর্ণ দশায়। বর্ষাকালে কেউই ওই শেডের নীচে দাঁড়াতে পারেন না। জল পড়ে। ফলে রোদ, বৃষ্টি মাথায় নিয়েই দীর্ঘক্ষণ বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হন যাত্রীরা।
নিত্যযাত্রী অসীমা রায় কলকাতায় একটি বেসরকারি অফিসে কাজ করেন। তিনি বলেন, “একটু বৃষ্টি হলেই বাসস্ট্যান্ডে জল জমে যায়। তার উপর ‘বাস বে’গুলো সবই প্রায় দখল করে নিয়েছে হকাররা। এই অবস্থা আমরা যাত্রীরা ফালতু। আমাদের কথা কে ভাবে।”
আমতা-১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু ঘোষ আমতা বাসস্ট্যান্ডের অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তাঁর কথায়, “বাসস্ট্যান্ডের সংস্কারে পরিকল্পনা করা হয়েছে। দোতলা বাসস্ট্যান্ড করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা পরিবহণ দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি।”