অরক্ষিত এটিএমে ধর্ষণ হাওড়ায়

চলন্ত বাস, কারখানা চত্বরের পরে এ বার এটিএম কাউন্টারে ধর্ষণ! হাওড়ার নাজিরগঞ্জ এলাকায় একটি রক্ষিহীন এটিএম কাউন্টারের ভিতরেই এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। যুবকটিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার ভোরে ঘটনাটি ঘটে নাজিরগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের অধীন পোদড়ায়। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম মহম্মদ রাজেশ। তার বাড়ি পোদড়ার আজাদ বস্তিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৪ ০৩:৩৬
Share:

এই এটিএমেই ধষর্ণ হয় বলে অভিযোগ। ছবি: সুব্রত জানা।

চলন্ত বাস, কারখানা চত্বরের পরে এ বার এটিএম কাউন্টারে ধর্ষণ!

Advertisement

হাওড়ার নাজিরগঞ্জ এলাকায় একটি রক্ষিহীন এটিএম কাউন্টারের ভিতরেই এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। যুবকটিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার ভোরে ঘটনাটি ঘটে নাজিরগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের অধীন পোদড়ায়। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম মহম্মদ রাজেশ। তার বাড়ি পোদড়ার আজাদ বস্তিতে। আর বছর পঁয়ত্রিশের ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। ডাক্তারি পরীক্ষার পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে পাবলভ মানসিক চিকিৎসালয়ে পাঠানো হচ্ছে। এটিএমের সিসিটিভির ফুটেজও সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশি সূত্রের খবর, পোদড়া মোড়ের কাছে রাস্তার ধারে নতুন এটিএম কাউন্টার খুলেছে একটি বেসরকারি সংস্থা। দিনে-রাতে কখনওই ওই কাউন্টারে কোনও নিরাপত্তারক্ষী থাকে না। অভিযোগ, ওই কাউন্টারেই মহিলাকে ধর্ষণ করে যুবকটি।

Advertisement

ঠিক কী ঘটেছিল?

পুলিশ জানায়, এ দিন ভোর ৪টে নাগাদ এলাকার দুই ব্যক্তি বিয়েবাড়ি থেকে ফিরছিলেন। ওই এটিএম কাউন্টারের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁরা কাচের দেওয়াল দিয়ে দেখতে পান, এক মহিলা চিৎকার করে হাত-পা ছুড়ছেন। তাঁর উপরে চড়াও হয়েছে এক যুবক। সন্দেহ হওয়ায় দরজা খুলে ভিতরে ঢোকেন তাঁরা। দেখেন, মেঝেতে অর্ধনগ্ন অবস্থায় পড়ে মহিলা। তাঁরা ওই মহিলার কাছে জানতে চান, কী হয়েছে? সেই ফাঁকে অভিযুক্ত যুবক বাইরে রাখা সাইকেল চেপে পালানোর চেষ্টা করে। তাঁরা কাউন্টার থেকে বেরিয়ে তাড়া করে তাকে ধরে ফেলেন। নাজিরগঞ্জ ফাঁড়িতে ফোন করা হয়। পুলিশ এসে যুবককে আটক করে এবং ওই মহিলাকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়।

বছর সাতাশের বিবাহিত যুবক রাজেশ স্থানীয় একটি গুদামে খালাসির কাজ করে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ধৃতকে এ দিন হাওড়া আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে পাঁচ দিন পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। রাতে আদালতের বিশেষ অনুমতি নিয়ে ওই মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই ভবঘুরে মহিলাকে একটি মিষ্টির দোকানে মিষ্টি চাইতে দেখেছিলেন এলাকার লোকজন। রাতে তিনি আশ্রয় নেন ওই এটিএম কাউন্টারের সিঁড়িতে। রাজেশকে জেরা করে পুলিশ জেনেছে, মঙ্গলবার রাতে গুদামের মালিক রাজেশকে কাজের জন্য রাত ১২টা নাগাদ গুদামে ডেকেছিলেন। গুদামে যাওয়ার সময় সে ওই মহিলাকে কাউন্টারের সামনে বসে থাকতে দেখে। ভোরে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার সময় মদ্যপান করে ওই যুবক। মহিলাকে তখনও কাউন্টারের সামনে বসে থাকতে দেখে তাঁকে জোর করে কাউন্টারের ভিতরে টেনে নিয়ে যায় সে। অভিযোগ, তার পরে তাঁকে ধর্ষণ করে রাজেশ।

মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলা নিজের নাম-ঠিকানা জানাতে পারেননি। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর কাছ থেকে তেমন সাড়া পায়নি পুলিশ। তবে এতে তদন্তে কোনও অসুবিধা হবে না বলে পুলিশের দাবি। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, সাক্ষী হিসাবে দু’জন প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া গিয়েছে। রয়েছে এটিএম কাউন্টারের সিসিটিভির ফুটেজও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন