আরাবুল কাণ্ডে চিঠি দিয়ে ক্ষমা চাইলেন শিক্ষিকা

উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে পড়েছিলেন তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। আর তার জন্য শেষ পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিক সংসদের কাছে লিখিত ভাবে দুঃখ প্রকাশ করলেন ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষিকা (সেন্টার ইনচার্জ) গোপা রায়। সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস বুধবার জানান, গোপাদেবী গত মঙ্গলবার চিঠি দিয়ে এই ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৪ ০৩:০৭
Share:

উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে পড়েছিলেন তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। আর তার জন্য শেষ পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিক সংসদের কাছে লিখিত ভাবে দুঃখ প্রকাশ করলেন ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষিকা (সেন্টার ইনচার্জ) গোপা রায়।

Advertisement

সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস বুধবার জানান, গোপাদেবী গত মঙ্গলবার চিঠি দিয়ে এই ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এর আগে অবশ্য গোপাদেবীই লিখিত ভাবে সংসদকে জানিয়েছিলেন, গত শুক্রবার পরীক্ষা চলার সময় আরাবুল ইসলাম বিনা অনুমতিতে সেখানে ঢুকে পড়েন। তৃণমূলের ওই নেতা তাঁকে গালিগালাজ করেছিলেন বলেও অভিযোগ জানান গোপাদেবী। সংসদ ওই ঘটনায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তদন্ত শুরুর আগেই ইঙ্গিত দেয়, সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলার জন্য গোপাদেবীকে ‘শো-কজ’ বা কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানো হতে পারে।

শিক্ষাজগতের সঙ্গে যুক্ত অনেকেরই ধারণা, আসলে শো-কজের হুমকির মুখেই পরীক্ষা কেন্দ্রে বহিরাগতের প্রবেশের দায় নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন গোপাদেবী। সংসদের সভানেত্রী এ দিন জানান, তাঁর মতে, গোপাদেবীর এই চিঠি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু ওই শিক্ষিকা বহিরাগতের প্রবেশ নিয়ে গত শনিবার যে-চিঠি দিয়েছেন, সংসদ সেটিকে আদৌ গুরুত্ব দেবে কি না, সভাপতি এ দিন তা স্পষ্ট করেননি। মহুয়াদেবী বলেন, “গোপাদেবী ছাড়া অন্য কেউ এই অভিযোগ জানাননি। তিনিই আবার স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে চিঠি দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। আমরা একে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছি।”

Advertisement

অনুসন্ধান কমিটি গড়ে তদন্ত করার ব্যাপারেও সংসদের সভানেত্রী এ দিন কিছু জানাতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, “এই ঘটনা সম্পর্কে গোপাদেবীর অভিযোগ ছাড়া আমাদের কাছে কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। আপাতত আমরা পরীক্ষাটা নির্বিঘ্নে শেষ করার উপরেই নজর দিচ্ছি।” প্রশ্ন উঠেছে, গোপাদেবীই যেখানে সেন্টার ইনচার্জ, সেখানে তাঁর অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত হবে না কেন? সংসদ-কর্তাদের জবাব, “পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগে বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামানো হচ্ছে না।”

আরাবুল অবশ্য গোড়া থেকেই স্কুলে ঢুকে গোলমাল করার কথা অস্বীকার করে আসছেন। তাঁর দাবি, মিথ্যা কথা বলে ফাঁসানো হচ্ছে তাঁকে। কিন্তু গোপাদেবীর অভিযোগ, পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছু পরে আরাবুল অন্য এক তৃণমূল নেতাকে নিয়ে নারায়ণপুর হাইস্কুলে ঢোকেন। পরীক্ষার্থীদের ঘরে ঢুকে তিনি নির্ভয়ে পরীক্ষা দিতে বলেন এবং কোনও প্রশ্নের উত্তর না-পারলে শিক্ষক-শিক্ষিকাকে জিজ্ঞাসা করার পরামর্শ দেন। শিক্ষক-শিক্ষিকারা সব উত্তর বলে দেবেন বলে অভয়ও

দেন তিনি। শিক্ষক-শিক্ষিকারা এর প্রতিবাদ জানালেও আরাবুল আমল দেননি। সেই সময় এক পরীক্ষার্থীকে ঘর থেকে বেরিয়ে আরাবুলের সঙ্গে কথা বলতে দেখে কারণ জিজ্ঞাসা করেন গোপাদেবী। তখন আরাবুল তাঁকে গালাগালি দেন বলে অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন