দলে যোগদানকারীদের তৃণমূলের পতাকা তুলে দিচ্ছেন সাংসদ ইদ্রিস আলি।—নিজস্ব চিত্র।
ভাঙন দেখা দিল কংগ্রেস পরিচালিত বসিরহাট পুরসভায়। মঙ্গলবার বিকালে স্থানীয় রবীন্দ্র ভবনে সংক্ষিপ্ত এক অনুষ্ঠানে সাংসদ ইদ্রিস আলির উপস্থিতিতে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন বসিরহাট পুরসভার উপপুরপ্রধান অমিত দত্ত। একইসঙ্গে এ দিন তৃণমূলে যোগ দেন বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রয়াত সিপিএম বিধায়ক নারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের ছেলে স্থানীয় সিপিএম নেতা উৎপল মুখোপাধ্যায়। গত এপ্রিল মাসে মারা যান নারায়ণবাবু। ফলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন হওয়ার কথা। এই সময়ে বসিরহাট পুরসভার উপপুরপ্রধান এবং উৎপলবাবুর তৃণমূলে যোগদান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহল। দু’জনেরই দাবি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কাজে অনুপ্রাণিত হয়েই তাঁদের এই দলে যোগদান।
এ দিন রবীন্দ্র ভবনে তৃণমূল সাংসদ ইদ্রিস আলি ছাড়াও ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সভাধিপতি রহিমা মন্ডল, জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামী, তৃণমূলের জেলা নেতা শিবু বন্দ্যোপাধ্যয়, বিভূ চট্টোপাধ্যায়, টাকি পুরসভার পুরপ্রধান, হাড়োয়া এবং বসিরহাট উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক প্রমুখ। উৎপলবাবু বলেন,‘‘বর্তমানে সিপিএমে কোনও রণকৌশল এবং রাজনীতির বালাই নেই। উন্নয়ন তো দূরঅস্ত, মানুষের দুর্দশা কমাতে জনকল্যাণমুখী আন্দোলনও করতে পারেনি। তাই সিপিএমের প্রতি মানুষের আস্থা, ভালবাসা কমে গিয়েছে।” তিনি জানান, মমতা বন্দোপাধ্যায় উন্নয়নের কাজে সাড়া ফেলে দিয়েছেন বলেই মানুষের হয়ে কাজ করতে তৃণমূলে যোগ দিলাম।’’
কয়েক’শো অনুগামী সহ তৃণমূলে যোগ দেওয়া অমিত দত্তের বক্তব্য, ‘‘পুরসভার উপপুরপ্রধান হিসাবে দাযিত্ব নিয়ে মানুষের কাজ করতে চেয়েছিলাম। দল আমাকে তা করতে দেয়নি। এ জন্য আমি পুরবাসীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থী। এখন তৃণমূলে যোগ দিয়ে চেষ্টা করব একজন কাউন্সিলার হিসাবে মানুষের জন্য কাজ করতে।’’
বর্তমানে বসিরহাট পুরসভার ২২টি ওয়ার্ডের কংগ্রেস ১০টি , তৃণমূল ৭টি, সিপিএম ৪টি এবং সিপিআইয়ের দখলে একটি। পুরপ্রধান কংগ্রেসের কৃষ্ণা মজুমদার। স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, কাজের নিরিখে যেখানে তৃণমূল পরিচালিত টাকি পুরসভা ইছামতী সংলগ্ন আধুনিক পার্ক, গেস্ট হাউস, নকল সুন্দরবন-সহ নানা কাজ করেছে।, সেখানে বসিরহাট পুর এলাকায় ইছামতী নদীর পাশে থাকা তিনটি পার্কে শিশুদের খেলার সরঞ্জাম বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে। খুলে নেওয়া হয়েছে ফোয়ারা। রাস্তাঘাট, আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জলের অবস্থাও তথৈবচ। এই অবস্থায় বিরোধীদের পক্ষ থেকে কয়েকবার কংগ্রেস পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধে অনাস্থাও আনা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, উন্নয়ন নিয়ে দলবাজির ফলে ভুগতে হচ্ছে পুরবাসীদের।
এ দিন ইদ্রিস আলি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের নির্দেশ, এই কেন্দ্রে উপ নির্বাচনে তৃণমূলকে জেতাতেই হবে। বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসকে হটিয়ে এই আসনটি ামাদের মুখ্যমন্ত্রীকে উপহার দিতে হবে।” তাঁর প্রতিশ্রুতি, “জিতলে সাংসদ তহবিলের টাকায় বসিরহাটকে সাজিয়ে তুলব। এখানে উন্নয়নের জোযার বইয়ে দেব।”