গ্যাসের সিলিন্ডার লুঠ, ৫ দুষ্কৃতী ধৃত শ্রীরামপুরে

পাহারাদারকে বেঁধে রেখে গুদাম থেকে ফাঁকা গ্যাসের সিলিন্ডার ট্রাকে তুলে পালাচ্ছিল দুষ্কৃতীরা। শেষ রক্ষা অবশ্য হল না। মাঝপথে পুলিশের হাতে বমাল ধরা পড়ে গেল দুই দুষ্কৃতী। পরে আরও তিন জন ধরা পড়ে পুলিশের জালে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীরামপুরের পিয়ারাপুরের কাছে। তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান, ধৃতেরা সিলিন্ডারে গ্যাস ভরার চক্রের সঙ্গে যুক্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৩১
Share:

পাহারাদারকে বেঁধে রেখে গুদাম থেকে ফাঁকা গ্যাসের সিলিন্ডার ট্রাকে তুলে পালাচ্ছিল দুষ্কৃতীরা। শেষ রক্ষা অবশ্য হল না। মাঝপথে পুলিশের হাতে বমাল ধরা পড়ে গেল দুই দুষ্কৃতী। পরে আরও তিন জন ধরা পড়ে পুলিশের জালে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীরামপুরের পিয়ারাপুরের কাছে। তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান, ধৃতেরা সিলিন্ডারে গ্যাস ভরার চক্রের সঙ্গে যুক্ত।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ৭-৮ জন দুষ্কৃতী পিয়ারাপুর মোড়ের কাছে দিল্লি রোড-লাগোয়া একটি গ্যাসের গুদামে চড়াও হয়। অভিযোগ, পাহারাদারকে চাদর দিয়ে বেঁধে পাশের ঝোপে ফেলে রাখে তারা। তারপরে তালা ভেঙে গুদামে ঢোকে। বিনা বাধায় ২৬২টি ফাঁকা সিলিন্ডার ট্রাকে তুলে নিয়ে চম্পট দেয়। দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার পরে রাত পাহারাদার পিয়ারাপুর ফাঁড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। এরপরেই শ্রীরামপুরের আইসি প্রিয়ব্রত বক্সির নেতৃত্বে পুলিশ নাকাবন্দি শুরু করে।

গভীর রাতে পুলিশের নজরে আসে, দিয়ারায় বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোডের ধারে একটি ধাবার পিছন দিকে একটি ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। ট্রাকে বোঝাই করা মালপত্রের উপরে ত্রিপল চাপা দেওয়া। সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ ট্রাকে তল্লাশি করতেই সিলিন্ডারগুলি দেখতে পায়। সেখান থেকে তারক বিশ্বাস এবং মহম্মদ নাসিম নামে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার ভদ্রেশ্বরের গ্যাঞ্জেস এলাকা থেকে ট্রাকের মালিক গব্বর হোসেনকে ধরা হয়। ত্রিবেণী থেকে মিন্টু মালো এবং ধনেখালি থেকে অমর দাস নামে আরও দু’জন ধরা পড়ে। ধৃতেরা সকলেই হুগলির বাসিন্দা। তারক এবং নাসিমকে শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে দু’জনকেই সাত দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

Advertisement

তদন্তকারী এক পুলিশ অফিসার বলেন, “আমরা নিশ্চিত, অসাধু উপায়ে সিলিন্ডারে গ্যাস ভরার চক্রের সঙ্গে ওই দুষ্কৃতীরা জড়িত। চক্রে থাকা বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। কোথায় সিলিন্ডারগুলি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, ধৃতদের জেরা করে তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।” পুলিশের বক্তব্য, দুষ্কৃতীরা ট্রাকটি ধাবার পিছনে এমন ভাবে রেখেছিল, যাতে রাস্তা থেকে দেখে বোঝা না যায়। পুলিশ যে সেখানে তল্লাশি চালাতে শুরু করবে, তারা তা বুঝে উঠতে পারেনি।

ফাঁকা সিলিন্ডার লুঠের ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। পুলিশ জানায়, দিন কয়েক আগে তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙায় অনেকগুলি সিলিন্ডার একটি গুদাম থেকে লুঠের অভিযোগ ওঠে। কয়েক মাস আগে শ্রীরামপুরের দু’টি জায়গায় বেআইনি ভাবে সিলিন্ডারে গ্যস ভরার অভিযোগে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছিল। খালি ও ভর্তি বেশ কিছু গ্যাস সিলিন্ডারও উদ্ধার হয়েছিল সে সময়ে।

পুলিশের দাবি, এ দিনের ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতী দলটি দীর্ঘদিন ধরেই হুগলির নানা প্রান্তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল। মূলত, কারখানায় ডাকাতি-ছিনতাইয়ে এরা সিদ্ধহস্ত। এদের মধ্যে অমর ওরফে জামাইয়ের বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি-সহ নানা অভিযোগ আছে পুলিশের খাতায়। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “বেশ কয়েক বছর আগে গুড়াপে একটি সোনার দোকানে ডাকাতি করে পালানোর সময় আরজি পার্টির দুই সদস্য খুন হন। সেই ঘটনায় অভিযোগ রয়েছে জামাইয়ের বিরুদ্ধে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন