অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে

ছুরিতে জখম হয়ে সিপিএম সমর্থক মহিলা হাসপাতালে

সিপিএম সমর্থক এক মহিলার উপর হামলার ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। গুরুতর জখম ওই মহিলাকে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে বুধবার শ্রীরামপুর ওয়ালশে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তারকেশ্বর শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৪ ০০:৫৬
Share:

হাসপাতালে মহিলা।—নিজস্ব চিত্র।

সিপিএম সমর্থক এক মহিলার উপর হামলার ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। গুরুতর জখম ওই মহিলাকে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে বুধবার শ্রীরামপুর ওয়ালশে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

Advertisement

তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙা পঞ্চায়েতের নস্করপুরে ওই ঘটনা ঘটে মঙ্গলবার রাতে। সান্ত্বনা মণ্ডল নামে বছর চল্লিশের এক মহিলাকে ছুরি দিয়ে উপূর্যপরি আঘাত করে কয়েকজন যুবক। সান্ত্বনাদেবী জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তিনি স্থানীয় একটি মুদি দোকান থেকে মোবাইল ফোন রিচার্জ করিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় একটি মোটর বাইকে চেপে তিন যুবক তাঁর পথ আগলে দাঁড়ায়। তার পরেই ওই ঘটনা। হামলাকারীরা পালিয়ে গেলে রক্তাক্ত ওই মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

তৃণমূলের লোকজন ওই হামলার পিছনে রয়েছে বলে অভিযোগ। ওই মহিলা অবশ্য পুলিশের অভিযোগে জানিয়েছেন, অপরিচিত কয়েকজন তাঁর উপর হামলা চালায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ মামলা শুরু করেছে। ওই পরিবারের এক সদস্যর দাবি, “এক দিকে তৃণমূলের সন্ত্রাস এবং অন্য দিকে পুলিশের পক্ষপাতমূলক আচরণের আশঙ্কায় আমরা শঙ্কিত।” যদিও হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিতাভ বর্মা বলেন, “ওই ঘটনায় যুক্তদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে। ছুরি মারার ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে কি না তাও পুলিশ দেখছে।”

Advertisement

কিন্তু কেন মহিলার উপরে হামলা চালানো হল?

মহিলার পরিবারের দাবি, ঘটনার পিছনে রয়েছে গ্রাম্য রাজনীতি। মহিলার নিকট আত্মীয় যুবক প্রণব মান সিপিএম কর্মী। তিনি পাশের বাড়িতেই থাকেন। ভোটে সিপিএমের পোলিং এজেন্ট হয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই আক্রোশে ওই রাতে প্রণবকেই খুঁজতে এসেছিল তৃণমূলের লোকেরা। ওই মহিলাকে সামনে পেয়ে ‘সিপিএমের উপরে আক্রোশ’ মিটিয়ে নেয় তারা। বুধবার সকালে জখম ওই মহিলাকে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সান্ত্বনাদেবী বলেন, “আমরা সিপিএম করি। প্রণব দলের এজেন্ট হয়েছিল। তাই ওরা প্রণবকে খুঁজতে এসেছিল। রাস্তায় আমাকে দেখে আক্রমণ করল।” ঘটনার পরে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলে।

প্রণববাবু বলেন, “নৃশংস ভাবে মাসিকে আক্রমণ করেছে তৃণমূলের ছেলেরা। এর আগেও একাধিকবার আমাদের বাড়িতে হামলা হয়েছে। কোনও প্রতিকার পাইনি। পুলিশে অভিযোগ করার সাহস পাইনি। যাতে অভিযোগ দায়ের না করি, তার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে।” প্রয়োজনে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

জেলা সিপিএম নেতা সুনীল সরকার বলেন, “থানায় অভিযোগ জানানোর পরিস্থিতি এখন নেই। থানা তৃণমূলের পার্টি অফিস হয়ে গিয়েছে।” জেলা পুলিশের এক শীর্ষকর্তা অবশ্য জানান, ঘটনার বিধিবদ্ধ তদন্ত শুরু হওয়ার পরে পক্ষপাতের প্রশ্ন অবান্তর। তারকেশ্বরের পুরপ্রধান, তৃণমূল নেতা স্বপন সামন্ত বলেন, “ওঁদের জমানাতেই থানা আর সিপিএম পার্টি অফিস সমার্থক হয়ে গিয়েছিল। এখন সেই পরিস্থিতি নেই। পুলিশ বহু ক্ষেত্রে নানা ঘটনায় আমাদের সমর্থকদেরও গ্রেফতার করেছে। সিপিএমের ওই নেতার মতিভ্রম হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন