ট্রান্সফর্মার না সারানোয় বিক্ষোভ, ভাঙচুর

দুঃসহ গরমে সপ্তাহ দু’য়েক ধরে বিদ্যুৎ কার্যত নেই। ফলে আলো জ্বলছে না। গরমের একটু আরাম পাখাও স্তব্ধ। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির বক্তব্য, ট্রান্সফর্মার খারাপ, আর তাতেই এই বিপত্তি। বাসিন্দাদের বক্তব্য, ট্রান্সফর্মার বিকল হতেই পারে। কিন্তু বার বার বলা সত্ত্বেও বিকল ট্রান্সফর্মার সারানোয় বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের কোনও উদ্যোগ নেই। বুধবার বিদ্যুৎ দফতরের সেই ‘গাফিলতি’র বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন গ্রামবাসীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিপাল শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৪ ০১:৩৫
Share:

অফিসের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম। ছবি: দীপঙ্কর দে।

দুঃসহ গরমে সপ্তাহ দু’য়েক ধরে বিদ্যুৎ কার্যত নেই। ফলে আলো জ্বলছে না। গরমের একটু আরাম পাখাও স্তব্ধ। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির বক্তব্য, ট্রান্সফর্মার খারাপ, আর তাতেই এই বিপত্তি। বাসিন্দাদের বক্তব্য, ট্রান্সফর্মার বিকল হতেই পারে। কিন্তু বার বার বলা সত্ত্বেও বিকল ট্রান্সফর্মার সারানোয় বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের কোনও উদ্যোগ নেই। বুধবার বিদ্যুৎ দফতরের সেই ‘গাফিলতি’র বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন গ্রামবাসীরা। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির অফিসে বিক্ষোভ দেখানো থেকে চলল ভাঙচুর। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির নালিকুলে। অবশ্য এ দিন বিকেলেই নতুন ট্রান্সফর্মার লাগানো হয় গ্রামে।

Advertisement

স্টেশন সুপার সঞ্জীবন সরকার বলেন, “আজকেই নতুন ট্রান্সফর্মার লাগানোর কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই লোকজন দফতরে চড়াও হল। ওরা কোনও কথাই শুনতে চাননি। ওরা হয়তো ভেবেছিলেন, অফিসে ভাঙচুর করলেই ট্রান্সফর্মার সারানো হয়ে যাবে।” দেরির প্রসঙ্গে তিনি জানান, ট্রান্সফর্মার আনানোর নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। সেই জন্য কিছুটা সময় লেগে গিয়েছে।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, নালিকুল পূর্ব পঞ্চায়েতের পূর্ব গোপীনাথপুর এবং মহিষগোট গ্রাম বেশ কিছুদিন ধরে কার্যত বিদ্যুৎহীন। যে টুকু সময় বিদ্যুৎ থাকে, তাতেও ভোল্টেজ এত কম থাকে যে বিদ্যুৎ থাকা না থাকার সমান। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি সূত্রের দাবি, পূর্ব গোপীনাথপুরে বসানো দু’টি ট্রান্সফর্মার থেকে ওই দুই গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। তার মধ্যে একটি সম্প্রতি বিকল হয়ে পড়ে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বিকল ট্রান্সফর্মার সারানোর জন্য তাঁরা বহুবার সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু আশ্বাস দিলেও এতদিন তাঁরা কাজের কাজ কিছু করেননি।

Advertisement

এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ শ’খানেক গ্রামবাসী নালিকুল বাজারে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কয়েকজন স্টেশন সুপারের ঘরে যান তাঁর সঙ্গে কথা বলতে। অভিযোগ, তারই ফাঁকে ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীদের একাংশ ভাঙচুর শুরু করেন। লাঠি দিয়ে অফিসের জানলার কাচ, আলো ভাঙা হয়। বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। গোলমাল, ভাঙচুরের সময় ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন হরিপাল থানার ওসি বঙ্কিম বিশ্বাস। তিনিই গিয়ে পরিস্থিতি সামলান। এক গ্রামবাসীকে আটক করা হয়। ঘটনাস্থলে নিতাই কোলে নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, “হায়দরাবাদে গয়নার দোকানে কাজ করি। কয়েক দিন আগে গ্রামে ফিরেছি। একে দুঃসহ গরম। তার উপর বিদ্যুৎ থাকছে না। বিদ্যুতের দাবিতেই গ্রামবাসীদের সঙ্গে এখানে এসেছি।”

মহিষগোটের বাসিন্দা শেখ ভোলা বলেন, “গরমে এমনিতেই টেকা যাচ্ছে না। তার উপর টানা ১৫ দিন বিদ্যুৎ নেই। বাচ্চাদের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়ছে। এর আগেও দু’বার এখানে এসে কর্তাদের অনুরোধ করেছি। সমস্যা দ্রুত মেটানো হবে বলে আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছুই করেনি। আজ কথা বলতে এসেছিলাম। বিক্ষোভ দেখাতে নয়। ভাঙচুর কারা করেছে জানি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন