দেওয়াল লিখন ঘিরে অশান্তি

লোকসভা ভোটের প্রচার এখনও সে ভাবে জমেনি। এরই মধ্যে দেওয়াল-লিখন ঘিরে অশান্তির জেরে তেতে উঠল হুগলির পাণ্ডুয়া। বীরভূমের খয়রাশোলেও দেওয়াল প্রচার নিয়ে সিপিএম-তৃণমূল গোলমাল বাধে। পাণ্ডুয়ায় গোলমাল শুরু শুক্রবার রাত থেকেই। তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। ছ’জনের মাথা ফাটে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

পাণ্ডুয়া শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৪ ০১:৫৬
Share:

লোকসভা ভোটের প্রচার এখনও সে ভাবে জমেনি। এরই মধ্যে দেওয়াল-লিখন ঘিরে অশান্তির জেরে তেতে উঠল হুগলির পাণ্ডুয়া। বীরভূমের খয়রাশোলেও দেওয়াল প্রচার নিয়ে সিপিএম-তৃণমূল গোলমাল বাধে।

Advertisement

পাণ্ডুয়ায় গোলমাল শুরু শুক্রবার রাত থেকেই। তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। ছ’জনের মাথা ফাটে। গোলমাল থামাতে গিয়ে পাণ্ডুয়া থানার এক সাব ইনস্পেক্টর-সহ ছ’জন পুলিশ কর্মী আহত হন। পাল্টা হিসেবে সিপিএম কার্যালয় ভাঙচুর করে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার সন্ধে ৭টা নাগাদ পাণ্ডুয়ার বেলুন-ধামাসিন পঞ্চায়েতের ভায়রা গ্রামে দলীয় প্রার্থী রত্না দে নাগের সমর্থনে দেওয়াল লিখছিলেন তৃণমূলের কিছু কর্মী। অভিযোগ, সিপিএমের লোকজন তাঁদের মারধর করে। এক জন আহত হন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান তৃণমূল কর্মীরা। ফেরার সময় ফের ওই তৃণমূল কর্মীদের উপর সিপিএমের লোকেরা লাঠিসোটা নিয়ে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। ছ’জনের মাথা ফাটে। পুলিশ এসে আহতদের পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে চার জনকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ওই ঘটনার জেরে শনিবার সকালে একদল তৃণমূল সমর্থক সিপিএমের জোনাল কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন দেয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের তরফে জেলা পরিষদ সদস্য সৌরেন বসু-সহ ২৭ জন সিপিএম কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ সারা রাত তল্লাশি চালিয়ে সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য সুশান্ত চক্রবর্তী-সহ মোট ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। সৌরেনবাবুর খোঁজ চলছে।

Advertisement

রাজ্য জুড়ে সিপিএম কোণঠাসা হলেও পাণ্ডুয়ায় এখনও তারা বেশ শক্তিশালী। হুগলির ১৮টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে যে দু’টি বামেদের দখলে রয়েছে, তার অন্যতম পাণ্ডুয়া। পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতি সিপিএমের, জেলা পরিষদের তিনটি আসনও তাদের দখলে। আর ব্লকের ১৬টি পঞ্চায়েতের মধ্যে বামেদের দখলে রয়েছে ১৩টি। গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়েও সিপিএমের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। শুক্রবারের ঘটনার পর ব্লক তৃণমূল সভাপতি আনিসুল ইসলাম বলেন, “সিপিএম এখনও সন্ত্রাসের রাজনীতি করছে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্তের দাবি, “সিপিএমের দলীয় কোন্দলেই ওদের দলের লোকেরা পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছে।”

হুগলির সিপিএম প্রার্থী প্রদীপ সাহার অবশ্য বক্তব্য, “পুলিশের সামনে তৃণমূল আমাদের পার্টি অফিসে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। আমাদের কর্মীদের মেরেছে। আমাদের কেউ কোনও আক্রমণ করেননি।” জেলা সিপিএম সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরীর অভিযোগ, “পাণ্ডুয়ায় আমাদের সংগঠনে আঘাত হেনে এলাকা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূল।”

ধনেখালিতে পুলিশি হেফাজতে মৃত তৃণমূল নেতা কাজি নাসিরুদ্দিনের স্ত্রী তথা কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য মানুজা বিবির নির্বাচনী এজেন্ট রেজ্জাক মোল্লাকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, শনিবার ওই ঘটনায় রেজ্জাক, তাঁর স্ত্রী, মেয়ে-সহ ৮ জন জখম হন। লিখিত অভিযোগ হয়নি। মানুজার অভিযোগ, “থানায় যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে।” তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়ক অসীমা পাত্রের দাবি, “ওটা পারিবারিক গোলমাল। তা নিয়ে কুৎসা রটানো হচ্ছে।” শুক্রবার বীরভূমের খয়রাশোলের পেরুয়া গ্রামে সিপিএমের দেওয়াল লিখন মুছে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, তাদের ফেস্টুন ছিঁড়ে, মারধর করেছে সিপিএম। রাতেই এই ঘটনায় আশিস মেটে নামে এক তৃণমূল নেতাকে পুলিশ ধরে। শনিবার দুবরাজপুর আদালতে তিনি জামিন পান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন